আমদানিকারক খালাস না নেওয়ায় দুই কোটি ১০ লাখ টাকার রসুন নিয়ে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। ৪৬৪ টন রসুনের এই চালান নিলামে তুলে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে উচ্চ আদালতে রিট করে নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করেন আমদানিকারক। এর ১৫ দিন না যেতেই রসুনের এই চালান খালাস নেবেন না বলে জানান আমদানিকারক। এতে উভয় সংকটে পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ রসুন নিলামে বিক্রি করা যাচ্ছে না। আবার পচনশীল পণ্য হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ু
Advertisement
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার আলী রেজা হায়দার বলেন, আমদানি করে নির্ধারিত সময়ে খালাস না নেওয়ায় ১৬ কন্টেইনার রসুন নিলামে তোলা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি নিলাম কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আমদানিকারক এসব রসুন খালাস নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত ওই নিলামের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এখন আমদানিকারক মৌখিকভাবে বলেছেন- তারা রসুনের চালানটি খালাস নেবেন না। এজন্য আমরা আমদানিকারককে বলেছি রিট প্রত্যাহার করে নিতে।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় আমরা এখন বিডারদেরও (নিলামকারী) এসব রসুন হস্তান্তর করতে পারছি না। রসুন পচনশীল পণ্য। এখন যদি এসব রসুন বিডারদের দেওয়া না যায়, এই সময়ের মধ্যে এসব রসুন যদি পচে যায়, তাহলে কাস্টমস আইনে আমদানিকারকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আরোপ করার পদক্ষেপ নেবো।
জানা যায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকার ইমরান এন্টারপ্রাইজ নামের আমদানিকারক চায়না থেকে এসব রসুন আমদানি করেন। নির্ধারিত সময়ে খালাস না নেওয়ায় চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ১৬ কন্টেইনারে ৪৬৪ মেট্রিক টন রসুন নিলামে তোলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের নিলাম শাখা। নিলামে দুই কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ টাকায় এসব রসুন কিনে নেন সাতজন নিলামকারী (বিডার)। কিন্তু পরের দিন আমদানিকারক ইমরান এন্টারপ্রাইজ নিলাম স্থগিতের জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন। আদালত নিলামের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এর ১৫ দিন না যেতেই এসব রসুন খালান না নেওয়ার কথা জানিয়ে কাস্টমসের নিলাম শাখায় চিঠি দেন আমদানিকারক। এসময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে আদালতে দায়ের করা রিট মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। কিন্তু আমদানিকারক এখনো রিট প্রত্যাহার না করায় পচনশীল এসব রসুন নিয়ে বিপাকে পড়েছে কাস্টমস। অন্যদিকে নিলামের ২২ দিনেও হস্তান্তর না করায় এসব রসুন নিতে অনীহা প্রকাশ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বিডাররাও। এতে বন্দরের গোলায় থাকা কন্টেইনারে এসব রসুন পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Advertisement
এ নিয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় এক নিলামকারীর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নিলামকারী বলেন, আমরা পণ্যমূল্যের ১০ শতাংশ জামানত দিয়ে নিলামে অংশ নিয়েছি। পচনশীল পণ্য নিলামের চারদিনের মধ্যে হস্তান্তর করার কথা। এখন ২২ দিন পেরিয়ে গেছে। এসব রসুন আরও পচে যাচ্ছে। এখন খালাস নিলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তাই কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আমরা জামানতের চেক ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।
আমদানিকারক ইমরান এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. মুরসালিন মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা রসুনগুলো খালাস নেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেছি। কিন্তু আদালত থেকে রিটের কাগজপত্র পেতে কয়েকদিন দেরি হয়ে গেছে। এখন খালাস নিতে গেলে বন্দরের ডেমারেজ, শিপিং এজেন্টের ডেমারেজ, কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জরিমানা দিতে হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক বেশি লোকসান হয়ে যাবে। তাই রসুনগুলো খালাস না নেওয়ার বিষয়টি আমরা কাস্টমসকে জানিয়ে দিয়েছি।
কেএসআর/এএসএম
Advertisement