কৃষি ও প্রকৃতি

শীত পরবর্তী সময়ে বোরো ধান পরিচর্যায় করণীয়

এ বছর শীত দীর্ঘমেয়াদী হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বোরো ধানের পরিচর্যা কীভাবে করতে হবে সেই পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

Advertisement

ব্রি বলছে, বাংলাদেশে সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠতে থাকে। সে সময় বোরো ধানে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউরিয়া প্রয়োগ করা হয়। যা গাছের পাতা ও কুশির বাড়-বাড়তি এবং ধানের ফলন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কিন্তু এ বছর ঠান্ডা, পাশাপাশি মেঘলা আকাশের (সূর্যকিরণের স্বল্পতা) কারণে সার প্রয়োগ করার পরও নাইট্রোজেন, পটাশ, সালফার এবং জিংকের অভাবে বোরো ধানের পাতা এবং কুশির বাড়-বাড়তি অনেক কম হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার পাতা হলুদ-বাদামী রং ধরণ করেছে।

বোরো ধানের অধিক ফলন পেতে করণীয়

Advertisement

বর্তমানে দেশের মধ্যাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ও দিনের উচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সেক্ষেত্রে সাধারণ মাত্রায় সার প্রয়োগের পাশাপাশি বিঘাপ্রতি (৩৩ শতাংশ) অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করতে হবে।

ইউরিয়া স্বল্পমেয়াদী জাতে বিঘাপ্রতি ১৩ কেজি ও দীর্ঘ মেয়াদি জাতে ১৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া এমওপি ৬ কেজি, জিপসাম ৪ কেজি এবং ১ কেজি দস্তা দিতে হবে উভয় জাতের জন্য।

দীর্ঘ মেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে আরেকবার একই হারে শুধুমাত্র ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।

ব্রি বলছে, দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা যখন বাড়বে তখন উপরোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

Advertisement

আর হাওড়াঞ্চলে যেখানে সারের উপরি প্রয়োগ শেষ হয়নি, সেখানে উল্লিখিত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। যেখানে সারের উপরি প্রয়োগ শেষ হয়েছে সেসব জমিতে ৬০ গ্রাম এমওপি, ৬০ গ্রাম থিওভিট এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট ১০ লিটার পানিতে ভালভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে সাতদিন ব্যবধানে দুইবার স্প্রে করতে হবে।

আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থা এবং ধানের বৃদ্ধির বর্তমান পর্যায়ে পাতা ব্লাস্ট রোগ দেখা দিতে পারে। রোগ দেখা দিলে প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৮ গ্রাম ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন-ট্রুপার, অথবা প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৬ গ্রাম নাটিভো ৫ শতাংশ জমিতে সাতদিন ব্যবধানে দুইবার স্প্রে করতে হবে।

মাজরা পোকার হাত থেকে ফসলকে রক্ষার জন্য অনুমোদিত মাত্রায় কীটনাশক যেমন- সানটাফ ৫০ এসপি , ডার্সবান ২০ ইসি ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে।

এছাড়া, পাতা মোড়ানো পোকার জন্য অনুমোদিত মাত্রায় কীটনাশক যেমন- সাকসেস ২.৫ এসসি, ডার্সবান ২০ ইসি ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে।

এনএইচ/জেডএইচ/