আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তারা চায় না উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকুক। তাই সব কাজের বিরোধিতা করে। রাষ্ট্রপতির গঠিত সার্চ কমিটি থেকে নাম নিয়ে যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সেটাকে স্বাগত জানাবে আওয়ামী লীগ।কারণ আওয়ামী লীগ মনে করে নির্বাচন কমিশন একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এটার প্রতি আস্থা রাখতে হবে।
Advertisement
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সার্চ কমিটির ১০ জনের সবাই আওয়ামী লীগের লোক। বিএনপির এমন অভিযোগকে আওয়ামী লীগ ফোবিয়া বলে মন্তব্য করেছেন আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। এসময় তিনি বিএনপি নেতাদের দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত ঘরোনার রাজনীতি ও তাদের নেতা মির্জা ফখরুল সব সময় নেতিবাচক কথা বলেন ও এটা উনার বরাবরের অভ্যাস। তিনি মিথ্যাচার করেন, অপপ্রচার করেন ও হতাশা ছড়িয়ে বেড়ান।
Advertisement
নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিকভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনদের যেভাবে ঠিক করে দিবে বাংলাদেশের মানুষ সেভাবেই মেনে নিবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেটাই হোক না কেনো, তা মেনে নেবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে যা প্রয়োজন তা হচ্ছে নির্বাচন। আর নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন নির্বাচন কমিশন। সুতরাং সে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা থাকতে হবে, শ্রদ্ধা থাকতে হবে।
'গণতন্ত্র বিপন্ন হোক এটা মির্জা ফখরুলরা সব সময় চায়। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা থাকুক তারা চায় না। এটা ধারাবাহিকভাবে তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। '
ইসিতে ১০ জনই আওয়ামী লীগের, বিএনপির এমন এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, কে আওয়ামী লীগের লোক, কে আওয়ামী লীগের না সেটার রায় দেবে জনগণ। এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ করে। যে কোনো মানুষকে দেখলে তারা আওয়ামী লীগ ফোবিয়ায় ভোগে। আমাদের মনে হয়, তাদের ক্লিনিকে যেতে হবে। বিদেশে নেওয়ার দরকার নেই, দেশেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে।
এর আগে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
বরিশাল বিভাগের সভার বিষয়ে নাছিম বলেন, আজকে সভার মধ্য দিয়ে আমরা অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নকে ঢেলে সাজানো। তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করার যে নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করবো। যেখানে সম্মেলন বাকি আছে সেগুলো সম্পন্ন করবো। ১২ মার্চ সকাল ১০টায় একটি ভার্চুয়াল সভা হবে। আমরা বরিশাল বিভাগ দিয়ে শুরু করবো। জেলা উপজেলা ও ইউনিয়নের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে।
নাছিম জানান, বরিশালের মোট চারটি জেলার সম্মেলন বাকি আছে। পিরোজপুর ও বরগুনায় ৭ মার্চের আগে বর্ধিত সভা করা হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে শক্তিশালীকে করে বিএনপি-জামায়াত যে অপরাজনীতি সৃষ্টি করেছে, দেশবাসীকে একত্রিত করে এর জবাব দেবে আওয়ামী লীগ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। আমাদের নেতা কর্মীদের কোনো অভাব নাই। দেশের যতগুলো বিভাগে নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে বরিশালে ফলাফল ভালো। বরিশাল বিভাগে বিদ্রোহীর সংখ্যা কম। আমরা আশা করি, আমাদের মধ্যে যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে, ১২ মার্চের সভার মধ্য দিয়ে তা আমরা কমিয়ে আনবো। এসময় নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন আখ্যা দেন তিনি।
পরে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সদস্য গোলাপ রব্বানী চিনু, আনিসুর রহমান, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।
এসইউজে/একেআর/জিকেএস