‘আমার সব শ্যাষ হইয়া গেছে। এখন পোলারা কী করবে, কীভাবে খাবে? পোলা দুইডা আমার একেবারে পথে বইস্যা গেলো।’
Advertisement
রাজধানীর নীলক্ষেতে বইয়ের মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই ছেলের পুড়ে যাওয়া বই দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সত্তর বছর বয়সী জাহানারা বেগম।
টিভিতে আগুন লাগার খবর দেখে বিজয়নগর থেকে নীলক্ষেতে ছুটে এসেছেন তিনি। সঙ্গে এসেছেন তার দুই মেয়েও। জাহানারার দুই ছেলে নীলক্ষেতে বইয়ের দোকানি।
জাহানারার দুই ছেলে নাম জহির ও সাদ্দাম। তাদের দুটি বইয়ের দোকান নীলক্ষেত মার্কেটে। একটির নাম ‘নিউ বুক গার্ডেন’, অন্যটি ‘তপন বুট সেন্টার’।
Advertisement
কান্নাজড়িত কন্ঠে জাহানারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুই দোকানে প্রায় আট থেকে ১০ লাখ টাকার বই ছিল। গতকালও পাঁচ লাখ টাকার নতুন বই তুলেছে। কিস্তিতে টাকা নিয়া বইগুলো উঠাইছিল দোকানে। পোলারা বলছিল—সামনে স্কুল-কলেজ খুলবে, বিক্রি ভালো হবে। এটা ভেবে তারা ধার-দেনা করে দোকানে বই তুলছিল।’
নীলক্ষেতে আগুনে পুড়ে গেছে বহু বইয়ের দোকান
পরক্ষণে সন্তানদের সান্ত্বনা দেওয়ার সুরে তিনি বলেন, ‘আগুনে বই পুইড়্যা গেলেও জানডাতো বাঁচছে, কইছি—আল্লাহ রে ডাকো বাবা। বই গেলে বই আসবে, জান গেলে তো জান আইবো না।’
আগুন বইগুলোর অবস্থা জানতে চাইলে জাহানারা বেগম বলেন, ‘দুই পোলার সঙ্গে কথা হয়েছে। ওরা বলছে—সব বই পুইড়া শ্যাষ হইয়া গেছে। আমাকে বলেছে—আম্মা দোয়া করিয়েন।’
Advertisement
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ৪৭ মিনিটে রাজধানীর নীলক্ষেতের বইয়ের মার্কেটের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ব্যবসায়ীদের এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় হয়ে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, মার্কেটের লাভলী হোটেল থেকে আগুন বইয়ের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। দোকানগুলো ঘিঞ্জি। মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রও অপ্রতুল। এ কারণে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অগিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি।
টিটি/এএএইচ/এএসএম