অর্থনীতি

পণ্য ও সেবায় শুল্ক-করছাড়ের দাবি এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির

পর্যটনের অবিচ্ছেদ্য অংশ দেশের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ। অথচ বিদেশি পর্যটকদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে যেসব সরঞ্জাম ও পণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোর ওপর বিপুল পরিমাণে শুল্ক দিতে হয় মালিকদের। সেবার ওপরেও ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। আবার আয়ের ওপর দিতে হয় ৩৭ শতাংশ কর। এ বিপুল পরিমাণ শুল্ক-করের চাপে এ খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ উন্নয়নবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

করোনা মহামারিতে হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজগুলোর ব্যবসা প্রায় ধ্বংসের মুখে উল্লেখ করে এ ক্ষতি পোষাতে শুল্ক ও করের অব্যাহতি দাবি করেন তারা।

বক্তারা বলেন, আমদানি করা সরঞ্জামের ওপর হ্রাসকৃত হারে শুল্ক আরোপ করলে ভাড়াসহ অন্যান্য সার্ভিস চার্জ কমানো সম্ভব হবে। বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে ফ্লাইটের আগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা করানোর বাধ্যবাধকতা শিথিল করা ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার দাবিও জানান ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

এদিকে, বাংলাদেশে পর্যটনের বিকাশের ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিংকে দায়ী করেন কমিটির সদস্যরা। ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে পর্যটনখাতে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করার তাগিদ দিয়েছেন তারা। এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দেরও দাবি জানানো হয়। এছাড়া বৈঠকে গেস্ট হাউজ উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন এফবিসিসিআই-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর মধ্যে হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ অন্যতম। বিদেশি মুদ্রা অর্জনেও এ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। স্ট্যান্ডিং কমিটিকে এ খাতের সম্ভাবনা, সমস্যা ও সম্ভাব্য সমাধান বের করে প্রস্তাবনা আকারে এফবিসিসিআইতে জমা দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রস্তাবনা বিবেচনা করে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।’

কমিটির চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্তত তিনটি পর্যটনের উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বাকি লক্ষ্যগুলোর অর্জনও পরোক্ষভাবে পর্যটনের উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল। ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি অর্জন করতে হলে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

Advertisement

এসময় হোটেল, রিসোর্টে পর্যটকদের যৌক্তিক দামে মানসম্মত সেবা নিশ্চিতের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই-এর পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন। একই সঙ্গে দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশিক্ষণ, স্যুভেনির ও প্রকাশনা তৈরির তাগিদ দেন তিনি।

এফবিসিসিআই-এর মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, পর্যটনের উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আসছে এফবিসিসিআই। বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে কানাডা-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আলোচ্যসূচিতেও এ খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান খন্দকার রুহুল আমিন, তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দীন হেলাল, এ এইচ এম আমিনুল ইসলাম ভূইয়া, মো. মাহবুব আলম, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মেহদী আমিন চৌধুরীসহ অন্যান্য সদস্যরা।

ইএআর/এএএইচ/এএসএম