আইন-আদালত

সাংবাদিক কাজলের মামলা বাতিলের আবেদন হাইকোর্টে খারিজ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের করা আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ (নট প্রেস রিজেক্ট) করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ কাজলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। সাংবাদিক কাজলের পক্ষে উচ্চ আদালতে আবেদনটি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

Advertisement

ওইদিন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ৮ নভেম্বর সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন। সাংবাদিক কাজল বর্তমানে জামিনে আছেন।

আওয়ামী লীগের মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওসমান আরা বেলী এবং সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ২০২০ সালের ৯, ১০ ও ১১ মার্চ সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেন। মামলাগুলো করা হয় যথাক্রমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা ২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, ৪ এপ্রিল ও ১৪ মার্চ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা তিনটির অভিযোগপত্র জমা দেন।

Advertisement

এসব মামলায় সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কে অশালীন, মানহানিকর, আপত্তিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

২০২০ সালের ১০ মার্চ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল তার বকশিবাজারের বাসা থেকে দৈনিক পক্ষকাল কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে বের হন। হাতিরপুলের মেহের টাওয়ারের কার্যালয়ে পৌঁছান বিকেল সোয়া চারটার দিকে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটা থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় নিখোঁজ হওয়ার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর আদালতের হস্তক্ষেপে শফিকুলের ছেলে মনোরম পলক চকবাজার থানায় অপহরণের মামলা করেন।

৫৪ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর ওই বছরের ৩ মে ফটো সাংবাদিক কাজলের খোঁজ মেলে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে আটক করে। ওইদিনই তাকে যশোরের একটি আদালত ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে হাজতে পাঠায়।

গ্রেফতারের পর শফিকুলের বিরুদ্ধে প্রথমে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা করে পুলিশ। এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের একাধিক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

গ্রেফতারের প্রায় নয় মাস পর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর কারামুক্ত হন ফটো সাংবাদিক কাজল।

এফএইচ/এমএইচআর/জিকেএস