জাতীয়

শহীদ মিনার ঘিরে কড়া নিরাপত্তা

আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পূর্ণ হবে এদিন। একুশের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১ মিনিটে) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বায়ান্নর ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি ছাড়াও আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

Advertisement

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

বাঙালি জাতির জন্য এ দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অন্যদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিতও। যে কোনো জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদেরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডিবি, র‌্যাব, সোয়াটের টিম ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। স্মৃতির মিনার ঘিরে নেওয়া হয়েছে ছয় স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

Advertisement

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৫ জন প্রতিনিধি হিসেবে ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এছাড়া মাস্ক পরা ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

৬ স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পুলিশের-আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশ। শহীদ মিনার কেন্দ্রিক চারিদিকে যে রাস্তা রয়েছে তার প্রত্যেকটিতে পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টের বাইরের এলাকা ও ভেতরের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় কেউ কোনো ধরনের ব্যাগ বহন করতে পারবে না। নিজের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ প্রতিবছর এই শহীদ মিনার এলাকা থেকে প্রচুর মোবাইল ফোন চুরি হয়। শত শত মানুষ লাইনে থাকে। এতে করে মোবাইল চুরির বিষয়টি ধরা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়।

সোয়াট টিম, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে পুরো এলাকা তল্লাশি করা হবে। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকেও বিশেষ তল্লাশি করা হবে।

সারাদেশে র‌্যাবের ৭০০ টহল টিম, থাকবে ২৮২৬ সদস্য-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারাদেশে র‍্যাবের ৭০০টি টহল টিম থাকছে। এছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকছে দুই হাজার ৮২৬ জন র‌্যাব সদস্য। ঢাকার ভেতরে টহল টিম থাকবে ৩২৩টি। এজন্য এক হাজার ২২২ জন র‍্যাব সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। আর ঢাকার বাইরে থাকবে ৩৭৭টি টহল টিম। এক্ষেত্রে সারাদেশে এক হাজার ৬০৪ জন র‍্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। সব মিলিয়ে মোট ৭০০ টহল টিম এবং দুই হাজার ৮২৬ জন র‍্যাব সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

Advertisement

এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় নিরাপত্তায় স্থাপন করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পুরো এলাকায় সিসি টিভি ও এলইডি প্যানেল থাকছে ৫১টি।

চারটি বোম্ব ও ডগ সুইপিং টিম নিয়োজিত থাকবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায়। বিশেষ নজরদারি, গোয়েন্দা কার্যক্রম ও স্পেশাল অ্যাকশনের জন্য প্রস্তুত থাকবে ২৫৪ জনের একটি দল। এছাড়া মোতায়েন থাকবে পিকআপ (ভিভিআইপি স্কর্ট) ও মোটরসাইকেল টহল টিম। এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় নিরাপত্তায় স্থাপন করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পুরো এলাকায় সিসি টিভি ও এলইডি প্যানেল রয়েছে ৫১টি।

শহীদ দিবসে র‍্যাবের হেল্প নম্বর-র‍্যাব জানিয়েছে, প্রয়োজনে যেকোনো তথ্য বা সমস্যায় র‍্যাবের সাহায্য পেতে ০১৭৭৭-৭২০০২৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই: ডিএমপি কমিশনারসম্প্রতি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি থাকবে না। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডিবি, র‌্যাব, সোয়াটের টিম ও ডগ স্কোয়াড থাকবে। ছয় স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা করা হয়েছে। শহীদ মিনার কেন্দ্রীক চারিদিকে যে রাস্তা রয়েছে তার প্রত্যেকটিতে পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টের বাইরের এলাকা ও ভেতরের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে।

এবার কোভিডের জন্য কিছু বিধিনিষেধ আছে জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধিগুলো মানার ক্ষেত্রে সরকারঘোষিত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যেসব নির্দেশনা রয়েছে তা সবাইকে মেনে চলার অনুরোধ। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে আপনি আপনার পরিবারের কাছেই ফিরে যাবেন। সুতরাং আপনার নিরাপত্তা ও আপনার পরিবারের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করবেন।

 

তিনি বলেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় কেউ কোনো ধরনের ব্যাগ বহন করতে পারবে না। নিজের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ প্রতিবছর এই শহীদ মিনার এলাকা থেকে প্রচুর মোবাইল ফোন চুরি হয়। শত শত মানুষ লাইনে থাকে। এতে করে মোবাইল চুরির বিষয়টি ধরা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, অতি উৎসাহের কারণে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে উল্টোপথে আসার চেষ্টা করেন। তাদের কারণে বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো আপনাদের কাছ থেকেই জাতি শৃঙ্খলা শিখবে। দয়া করে নিয়ম মেনে চলবেন। যে রাস্তা দিয়ে আসার অনুরোধ করছি সে রাস্তা দিয়েই আসবেন। উল্টোপথে এসে অন্যদের বিরক্ত করবেন না।

সারাদেশে শহীদ মিনারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে: র‌্যাব ডিজিকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, শহীদ মিনার ভাঙচুর প্রতিরোধে সারাদেশে র‌্যাবের একাধিক টিম মোতায়েন রয়েছে। আমরা সবসময় এটি মনিটরিং করছি। সারাদেশে শহীদ মিনারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে র‌্যাব প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি। ডগ স্কোয়াড দিয়ে আমরা শহীদ মিনার এলাকায় সুইপিং করছি। বোম্ব স্কোয়াডও নিয়োজিত থাকবে। আমাদের হেলিকপ্টারও প্রস্তুত আছে। ইভটিজিং রোধে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে এবং আমরা সতর্ক থাকবো। করোনা আক্রান্তের হার কমে এলেও সবাইকে অনুরোধ করবো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করবেন। সরকার কর্তৃক যে বিধিনিষেধ রয়েছে মাতৃভাষা অনুষ্ঠানে সবাই তা মেনে চলবো।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। র‍্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন তাদের নিজ নিজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকবে, টহল থাকবে ও সাদা পোশাকে সারাদেশে র‍্যাবের সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। অগ্রীম পদক্ষেপ হিসেবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ আশেপাশের এলাকা ও সারাদেশে গত ১৮ তারিখ থেকে সাদা পোশাকে র‍্যাবের সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, অবজারভেশন পোস্ট, চেকপোস্ট ও স্টেটিক ডিউটি আমরা মোতায়েন করেছি। বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, স্ট্যান্ডবাই ফোর্সের পাশাপাশি র‍্যাবের মেডিকেল টিমও থাকবে। এছাড়াও র‍্যাব সদরদপ্তরের ইন্টেলিজেন্স টিম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর ও সারাদেশে কৌশলগত স্থানে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে এবং সঙ্গে আভিযানিক দলও মোতায়েন থাকবে।

২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বন্ধ থাকবে ঢাকার যেসব সড়ক-মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২ (২১ ফেব্রুয়ারি) যথাযথ ও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপন করার জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচল ও সব ধরনের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এসময় রাজধানীর কিছু সড়ক বন্ধ থাকবে বলেও নির্দেশনায় জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশের রাস্তা-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবাইকে পলাশী ক্রসিং ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে অনুরোধ করা হলো। কোনোক্রমেই অন্য কোনো রাস্তা ব্যবহার করে শহীদ মিনারে প্রবেশ করা যাবে না।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হওয়ার রাস্তাশহীদ মিনার থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে দোয়েল চত্বরের দিকের রাস্তা অথবা রোমানা চত্বরের রাস্তা দিয়ে বের হতে পারবেন। কোনোক্রমেই প্রবেশের রাস্তা দিয়ে বের হওয়া যাবে না।

যেসব রাস্তা বন্ধ থাকবে-১. বকশিবাজার-জগন্নাথ হল ক্রসিং সড়ক।২. চাঁনখারপুল-রোমানা চত্বর ক্রসিং সড়ক।৩. টিএসসি-শিববাড়ী মোড় ক্রসিং।৪. উপাচার্য ভবন-ভাস্কর্য ক্রসিং।

ডাইভারশন ব্যবস্থাক. ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় আলপনা অঙ্কনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের রাস্তা বন্ধ থাকবে। এসময় শিববাড়ী, জগন্নাথ হল ও রোমানা চত্বর ক্রসিংগুলোতে গাড়ি ডাইভারশন দেওয়া হবে।

খ. ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যত্রতত্র অনুপ্রবেশ বন্ধের লক্ষ্যে নীলক্ষেত, পলাশী মোড়, ফুলার রোড, বকশীবাজার, চাঁনখারপুর, শহীদুল্লাহ হল, দোয়েল চত্বর, জিমনেশিয়াম, রোমানা চত্বর, হাইকোর্ট, টিএসসি, শাহবাগ ইন্টারসেকশন রোড ব্লক দিয়ে গাড়ি ডাইভারশন দেওয়া হবে।

গ. ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টায় সাইন্সল্যাব থেকে নিউমার্কেট ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং থেকে নীলক্ষেত ক্রসিং এবং ফুলবাড়িয়া ক্রসিং থেকে চাঁনখারপুল ক্রসিং পর্যন্ত প্রভাতফেরি উপলক্ষে সব ধরনের যাত্রীবাহী গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থাক. একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠে ভিআইপি গাড়িগুলো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

খ. অন্যরা নীলক্ষেত-পলাশী, পলাশী-ঢাকেশ্বরী সড়কে তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন।

২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধায় মানতে হবে যেসব বিধিনিষেধ-

স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৫ জন প্রতিনিধি হিসেবে ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুজন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এছাড়া মাস্ক পরা ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে গত ১৬ জানুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে দিবসের কর্মসূচি বিষয়ক এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপন উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপগুলো ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাজনক স্থানগুলোতে বাংলাসহ অন্যান্য ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হবে। একুশের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং ভাষা শহীদদের সঠিক নাম উচ্চারণ, শহীদ দিবসের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা, শহীদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ইত্যাদি জনসচেতনতামূলক বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমগুলো প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা নেবে। সংবাদপত্রগুলো ক্রোড়পত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের বিষয়টি বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীতে ট্রাকের মাধ্যমে রাজপথে ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠান এবং নৌযানের সাহায্যে ঢাকা শহর সংলগ্ন নৌপথে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজনসহ জেলা-উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নেবে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তিন ধরনের পোস্টার মুদ্রণ করবে, যার মধ্যে প্রথমটি হবে সর্বজনীন, দ্বিতীয়টি স্কুল-কলেজের শিশু-কিশোরদের জন্য এবং তৃতীয়টি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশে অবস্থিত বৈদেশিক দূতাবাসগুলোতে প্রচারের জন্য।

বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক একাডেমি, বিরিশিরি, নেত্রকোণা, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গ্রন্থমেলা, আলোচনা সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, সুন্দর হাতের লেখা ও রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

এছাড়া এদিন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও অধীন শাখা জাদুঘরগুলো এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সব প্রত্নস্থল ও জাদুঘরে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) শিশুদের বিনা টিকিটে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

টিটি/এমকেআর