চাকরিবিধি ভঙ্গ করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
Advertisement
শরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযোগ এনে দুদক সচিব বলেছেন, দুর্নীতির তদন্তে প্রভাবশালীদের নাম আসায় তাদের চাপে শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে যেসব বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়। বারবার দুদকবিধি অমান্য করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসময় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানি, প্রহার করা, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার অভিযোগ আনেন শরীফ আহমেদের বিরুদ্ধে।
দুদক সচিব বলেন, কক্সবাজারের একজন সার্ভেয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে র্যাব ঘুসের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করে। এই টাকা ২০২০ সালের ১০ মার্চ আলামত হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে শরীফ উদ্দিনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা টাকা তিনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে ১ বছর ৪ মাস নিজের হেফাজতে রাখেন। পরে জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যা হাইকোর্টের দৃষ্টিতে এলে রুল জারি করা হয়। পরে এ বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। টাকা জমা না করার বিষয়ে তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা অগ্রহণযোগ্য।
কোনোভাবেই এই টাকা নিজের কাছে রাখার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এই টাকা সরকারি কোষাগার বা ট্রেজারিতে রাখতে হবে। কোনোভাবেই ব্যক্তি পর্যায়ে রাখার সুযোগ নেই। উনি তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে রেখেছেন। তদন্তকালে জব্দ করা জিনিস কোনো অবস্থাতেই আমার রুমে, আলমারিতে রাখতে পারব না। এটা আমার বিধানে এলাও করে না। মহামান্য হাইকোর্টও এলাও করেন না। দুদকের কোনো ভল্ট নাই, নিজস্ব কিছুই নাই। এটার নিয়ম হলো- যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরের দিন হ্যান্ডওভার করতে হবে। টাকা হইলে ট্রেজারিতে বা বাংলাদেশ ব্যাংকে বা দুদক কর্মকর্তারা যেভাবে বলে। উনি প্রায় ১ বছর ৪ মাস রেখেছেন, এটা ঠিক করেন নাই। এটা বিধির লঙ্ঘন।
Advertisement
যদিও এ বিষয়ে শরীফ উদ্দিন বলেছেন, ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এক অভিযানে ৭ বস্তা নথি ও ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা জব্দ করি। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ১০ মার্চ মামলা করি। মামলার পর জব্দকৃত টাকা ১৯ মার্চ কক্সবাজার থানা থেকে চট্টগ্রাম দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে নিয়ে আসি। মামলা হয়েছে বিধায় সেই টাকার সবই সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের ভল্টে রাখা আছে। এই টাকা আমার আত্মসাৎ করার কোনো সুযোগ নেই।
শরীফ উদ্দিনের এসিআরে কেন তার কার্যক্রমকে ‘অতি উত্তম’ বলা হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব বলেন, উনি সম্ভবত ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগদান করেছেন। স্বভাবগত কারণেই চাকরিতে জয়েন করার পর তাদের উৎসাহিত করার জন্য তখন তিনি যে কাজ কর্ম করেছেন, সেই হিসেবে তাকে মূল্যায়িত করা হয়েছিল, উৎসাহিত করার জন্য। পরবর্তীতে আমরা তথ্য দিয়েছি।
সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি আজ এই অবস্থানে আছেন, একদিন-দুইদিন পরে এই অবস্থানে থাকবেন কি না আপনিও জানেন না, আমিও জানি না। উনার সিকোয়েনশিয়াল যে মূল্যায়ন, সেটা আপনাকে আমলে নিতে হবে। এটা চাকরির একটা পার্ট। একটা দেখবো, বাকি সব ওভারল্যাপ করবো, এটা তো হতে পারে না।
এসএম/এমএইচআর/জেআইএম
Advertisement