ফিচার

স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে

এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়ে গেছে। এখন স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। অনেকেই কোচিং করছেন। এখন পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। পছন্দের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেতে চাইলে কিছু কাজ অবশ্যই করতে হবে। সেসব বিষয় নিয়েই আজকের আয়োজন—

Advertisement

আত্মবিশ্বাস জরুরি: প্রথমে আত্মবিশ্বাস খুবই জরুরি। কারণ ভর্তি পরীক্ষায় অনেক সময় জানা বিষয়গুলোও গুলিয়ে যায়। তাই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে বারবার প্রশ্ন পড়তে হবে। এতে উত্তর ঠিকই মাথায় আসবে। পাশাপাশি কোয়ালিটিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। যা পড়বেন অবশ্যই ভালো করে বিস্তারিতসহ পড়বেন। আধো আধো আইডিয়া নিয়ে তেমন লাভ হয় না। শেষে পস্তাতে হয়।

মনোযোগসহ পড়া: আপনি যতটুকু পড়বেন, মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তবে সারাদিনই যে পড়তে হবে এমনটা নয়। কখন কোন বিষয় পড়বেন, তা আগেই রুটিন করে নিলে ভালো হয়। সবশেষে পরীক্ষার আগের দিন কোচিং বা নিজের করা সব সিটে একবার করে হলেও চোখ বুলিয়ে নেবেন। এতে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে। মনে রাখবেন, আপনি কতক্ষণ পড়েছেন, সেটা মুখ্য নয়। মূল কথা হচ্ছে, সীমিত সময়ের মধ্যেও কী কী পড়েছেন? সেটাই আসল ব্যাপার।

প্রশ্নপদ্ধতি ও মানবণ্টন: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরনে অনেক পার্থক্য আছে। তাই আগেই প্রশ্নপদ্ধতি, মানবণ্টন, সময় ইত্যাদি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই বিগত বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো অবশ্যই শুরু থেকে সমাধান করা উচিত। এতে পুরোনো প্রশ্ন দেখলে প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। পাশাপাশি মানবণ্টন সম্পর্কেও ধারণা হবে। তেমনই প্রস্তুতির আদি-অন্ত বুঝতে পারবেন।

Advertisement

নিজের মতো পড়ুন: আপনি কোন বিষয়ে ভালো আর কোন বিষয়ে দুর্বল, তা খুঁজে বের করুন। এরপর কীভাবে পড়লে পড়া বুঝতে সুবিধা হবে—এসব আপনিই জানতে পারবেন। কোচিং বা মডেল টেস্টের পাশাপাশি নিজের পড়াশোনায়ও সময় দিতে হবে। মূল কথা, নিজের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করুন। প্রতিদিন নিজেই নিজের পরীক্ষা নিন। তাতে আপনার দুর্বলতা আরও স্পষ্ট হবে। ফলে নিজেকে সবল করার সুযোগ পাবেন।

তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য: বইয়ের সহায়ক হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারেন। এর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন। কারণ বইয়ে সব বিষয়ে বিস্তারিত বলা থাকে না। কিছু বিষয় পুরোনো বই থেকে পড়ে নিতে পারেন। চাইলে ইন্টারনেট থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। ইউটিউবেও কিছু ভিডিও পাবেন। যেখানে সহজ করে অনেক জটিল বিষয়ও বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বই পড়তে পড়তে একঘেয়ে লাগলে সেগুলোও দেখতে পারেন।

মূল বইয়ের গুরুত্ব: মূল বই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ে সুযোগ পেতে মূল বই অবশ্যই ভালোভাবে পড়তে হবে। এ ছাড়া বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের জন্য নবম-দশম থেকে শুরু করে বোর্ড বইয়ের উপরে গুরুত্ব দিতে হবে। তাই সবার আগে মূল বই। তারপর অন্যকিছু। এ ছাড়া শুধু একবার পড়ে গেলেই হবে না। বারবার পড়াগুলো রিভিশন দিয়ে একদম ঠোঁটস্থ করতে হবে।

নিজে নিজে সমাধান: কোচিং বা ভর্তি গাইডের মডেল টেস্ট নিজে নিজে সমাধান করতে চেষ্টা করুন। একান্তই না পারলে উত্তর দেখে বুঝে বুঝে সমাধান করবেন। যেগুলো একেবারেই পারবেন না বা দ্বিধাগ্রস্ত থাকবেন, সেগুলো এড়িয়ে যাবেন। সেগুলোর পেছনে অযথা মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোই সমাধানের চেষ্টা করবেন।

Advertisement

মানসিক দক্ষতা: বর্তমানে বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আইকিউ (মানসিক দক্ষতা) থেকে প্রশ্ন করা হয়। তাই আইকিউতে ভালো করা খুবই জরুরি। কিন্তু অনেকেই না জানার কারণে এর উপর ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন না। যারা আইকিউয়ের উপর প্রস্তুতি নেন; তারা এমনিতেই একধাপ এগিয়ে যান।

শরীরের যত্ন: ভর্তি পরীক্ষার আগ পর্যন্ত যতদূর সম্ভব রোগমুক্ত থাকতে হবে। এ সময়ে অসুস্থ হলে অনেক সময় নষ্ট হবে। এখন এক মিনিটের মূল্য অনেক। তাই সুস্থ থাকা অবস্থায় পড়াশোনা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অসুস্থ হয়ে দুই দিন নষ্ট হলেও অনেক বড় ক্ষতি। তাই অবশ্যই শরীরের প্রতি যত্ন নিতে হবে। খাওয়া-ঘুম বাদ দিয়ে পড়তে গিয়ে অসুস্থ হলে চলবে না। তবে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে। শেষ রাতে পড়তে পারলে ভালো। কারণ শেষ রাতে তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্থ হয়।

কৌশলী হতে হবে: যতদূর সম্ভব বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলে রাখবেন। আত্মবিশ্বাস যতই থাকুক না কেন, প্রথম পরীক্ষার ফলাফলের পরই তা বুঝতে পারবেন। কখনোই হতাশ হবেন না। নিজের উপর বিশ্বাস রাখবেন। চেষ্টা করে যাবেন। তাহলে অবশ্যই আপনি পারবেন।

এসইউ/জিকেএস