দেশজুড়ে

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪ দশক

যাত্রার পর এ পর্যন্ত গত চার দশকে তিন পার্বত্য জেলায় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট চার হাজার ৮১৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার নিয়ন্ত্রিত স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির চল্লিশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রোববার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ।উল্লেখ্য, সরকার ১৯৭৬ সালে পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। চলতি ১৪ জানুয়ারি বোর্ডটির চার দশক পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টায় বোর্ডের রাঙামাটির প্রধান কার্যালয় ভবনের ‘কর্ণফুলি’ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সদস্য সচিব নুরুল আলম চৌধুরী, সদস্য (পরিকল্পনা) প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা, প্রকল্প কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, সমন্বিত সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প কর্মকর্তা মো. জানে আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা।ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, গত চার দশকে এ পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলায় এক হাজার ২শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। যার মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার ৮৫০ মিটার সেচনালা ও ১২২টি জলাধার নির্মাণের মাধ্যমে ১২ হাজার ২২০ একর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া, ৩১৯টি মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা, ১ হাজার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫০টি ছাত্রাবাস ও বিজ্ঞানাগার, ৫৭টি বাজারশেড। এছাড়া, ৫৯টি যৌথ খামার, বান্দরবানের চিম্বুক, নীলাচল, মেঘলা ও খাগড়াছড়ির আলুটিলা, মাতাইপুখরীসহ বিভিন্ন জায়গায় পর্যটন অবকাঠামো, ৬১৫ কিলোমিটার রাস্তা, ৮১৪টি সেতু, ২ হাজার ৮৭১টি কালভার্ট, ৩৪টি যাত্রী ছাউনি, চারটি স্টেডিয়াম, ১১টি অডিটোরিয়াম, ৩টি জিমনেসিয়াম, ৯টি বিশ্রামাগার নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে।এছাড়া তিনটি পার্বত্য জেলায় চার হাজার পাড়াকেন্দ্র, ২২টি শিশুবান্ধব স্কুল ও চারটি আবাসিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেগুলো পরিচালনা করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মেধাবি ও অস্বচ্ছল প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। ২৩ হাজার ৮৩৫ একর জমিতে ফলজ বাগান ও ১৩ হাজার ২শ’ একর জমিতে রাবার বাগান সৃজন এবং তিন হাজার ৩শ’ পরিবারকে চার একর করে ভূমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপন ও যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।তরুণ কান্তি ঘোষ আরও জানান, ১৪ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের গৌরবের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মাউন্টেনবাইক প্রতিযোগিতা, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ব্যাপক কর্মসূচি পালিত হবে। এসব কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান র.আ.ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা।সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/আরআইপি

Advertisement