শেয়ারবাজারে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলেই যে কোনো বিনিয়োগকারী এসএমই প্ল্যাটফর্মে লেনদেন করতে পারবেন। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার জারি করা এ নির্দেশনায় সই করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
এর আগে শেয়ারবাজারে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলে এসএমই প্ল্যাটফর্মে লেনদেন করার সুযোগ পেতেন বিনিয়োগকারীরা।
বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেকোনো বিনিয়োগকারীর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলে তিনি কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারবেন। আর নিবন্ধিত বিনিয়োগকারী এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের লেনদেন করতে পারবেন।
Advertisement
কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে নিবন্ধন নিতে বিনিয়োগকারীদের কোনো চার্জ দিতে হবে না। তবে লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজের যে কমিশন আছে, তা দিতে হবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, আগে এসএমই প্ল্যাটফর্মের কোয়ালিফাড ইনভেস্টর হতে শেয়ারবাজারে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। এখন সেটি কমিয়ে ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে। ২০ লাখ টাকা বা তার বেশি বিনিয়োগ থাকা যে কোনো বিনিয়োগকারী কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে নিবন্ধিত হতে পারবেন।
তিনি বলেন, কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর হিসেবে নিবন্ধিত হতে বিনিয়োগকারীদের কোনো ফি দিতে হবে না। তবে এসএমই প্ল্যাটফর্মে সিকিউরিটি লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর যে কমিশন ধার্য আছে তা দিতে হবে।
বিভিন্ন পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় এমন স্বল্প মূলধনী কোম্পানির জন্য উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে ‘স্মল ক্যাপিটাল প্ল্যাটফর্ম’ নামে আলাদা বাজার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।
Advertisement
এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্প মূলধনের কোম্পনির জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার বাই স্মল ক্যাপ কোম্পানিজ) রুলস-২০১৬ প্রণয়ন করে। তবে ২০১৮ সালে এর কিছু বিধির সংশোধন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্মল ক্যাপ মার্কেট (এসএমই) প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করে। ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসএমই প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধনের আড়াই বছর পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেয়ারবাজারে এসএমই প্রতিষ্ঠানের লেনদেন শুরু হয়।
প্রথমিকভাবে ৬টি কোম্পানি নিয়ে শুরু হয় ডিএসইর এসএমই প্ল্যাটফর্মের লেনদেন। এই ছয় কোম্পানি হলো- বেঙ্গল বিস্কিট, ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়, অ্যাপেক্স ওয়েভিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং মিলস, মাস্টার ফিড এগ্রো, অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং হিমাদ্রী লিমিটেড।
এই এসএমই প্ল্যাটফর্মে শুধু কোয়ালিফাইড ইনভেস্টররা লেনদেন করতে পারেন। কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর বলতে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত সম্যক ধারণা রয়েছে এমন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ নিট সম্পদধারী ব্যক্তিকে বোঝায়।
বর্তমানে ডিএসই’র এসএমই প্ল্যাটফর্মে ১০টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে নিয়ালকো অ্যালয়স, কৃষিবিদ ফিড, মাস্টার ফিড এগ্রোটেক, মোস্তফা মেটাল, মামুন এগ্রো ও অরিজা এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ- এই ছয় কোম্পানি ‘কিউআইও’ প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বাকি চার কোম্পানি অ্যাপেক্স ওয়েভিং, বেঙ্গল বিস্কুট, হিমাদ্রি ও ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজকে বিএসইসির নির্দেশে ওটিসি থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে।
এমএএস/এমএইচআর/এএসএম