কৃষি ও প্রকৃতি

সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কুমিল্লার কৃষকদের

কুমিল্লার মুরাদনগরে রেকর্ড পরিমাণ উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন কৃষকরা। সরিষার বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। স্বল্প সময়ে উৎপাদনশীল ও একটি লাভজনক রবিশষ্য হওয়ায় এ এলাকায় সরিষা আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। গতবছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় আড়াই হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা আবাদ করা হয়েছে। যা কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

Advertisement

তাদের দাবি, আমন ফসল ঘরে তোলার পর স্বল্প সময়ে সরিষা চাষ লাভজনক ফসল হওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন এ ফসল চাষে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা প্রকাশ করছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, মুরাদনগরে ২৪ হাজার হেক্টর চাষাযোগ্য জমির মধ্যে গত বছর সরিষা চাষ হয়েছিল মাত্র ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। সে হিসেবে এবছর উপজেলায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৬১৭ হেক্টর জমিতে। করিমপুর, ইউছুফনগর, দিলালপুর, নেয়ামুতপুর, নোয়াগাঁও, কামাল্লা, রামচন্দ্রপুর, শ্রীকাইল, রোয়াচালা, কুড়াখাল, কুড়ন্ডি, বড়িয়াচরা, মোহাম্মদপুর, দিঘিরপাড়, রগুরামপুর, পুষ্কনিরপাড়, চৈনপুর, মোচাগড়া, দেওরাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে টরি ৭, বারি ৯, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও বিনা ৪, ৯, ১০, ১৪, ১৫, ১৭ জাতের সরিষা চাষ।

হেক্টর প্রতি সরিষা উৎপাদন হবে প্রায় ৭ থেকে ৮ টন। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সরিষা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকরা বেশ আনন্দিত।

Advertisement

কৃষক আলতাফ আলী বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারদের পরামর্শে বোরো ধানের আগে ১০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করছেন। প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করি বিঘা প্রতি ৮ মণ সরিষা পাওয়া যাবে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। কম খরচ ও অল্প দিনের পরিচর্যার মাধ্যমে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব সরিষা চাষে।

মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, কৃষকরা যেন অধিক লাভবান হতে পারে সেজন্য ‘বারি ১৭’ এর পাশাপাশি প্রায় ৩০০ চাষিকে সুপার কোয়ালিটি ‘বারি ১৮’ জাতের সরিষার বীজ দেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ সেবা দেয়া হয়েছে। সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমএমএফ/জিকেএস

Advertisement