মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত বছর গোটা ভারত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। সেসময় দেশটির রাজস্থানে কোভিড আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়েন এক চিকিৎসক। জমি-জমা সবকিছু বেচেও যখন স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না তখন নিজের ডিগ্রিটাই বন্ধক রেখে ঋণ নেন।
Advertisement
গত বছরের ঘটনাটি সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের নজরে এসেছে।
ওয়ান ইন্ডিয়া হিন্দ’র খবর থেকে জানা যায়, ৩২ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের নাম সুরেশ চৌধুরী। স্ত্রী অনিতা ও পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে রাজস্থানের পালি জেলার খেরওয়া এলাকায় থাকেন।
অনিতার ২০২১ সালের ১৩ মে করোনা শনাক্ত হয়। সেসময় তার অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য উপসর্গ বাড়তে থাকায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান সুরেশ। কিন্তু সেখানে বেড খালি না থাকায় স্ত্রীকে নেন জোধপুরের এইমস হাসপাতালে।
Advertisement
সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সে বছরের ১ জুন স্ত্রীকে নেন আহমেদাবাদের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে অনিতাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসা ছিল খুবই ব্যয়বহুল। প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ রুপির কাছাকাছি বিল হতো।
ব্যয়বহুল ওই হাসপাতালে অনিতাকে রাখা হয় প্রায় তিন মাস। এর আগের খরচসহ সব মিলিয়ে চিকিৎসা খরচ দাঁড়ায় প্রায় সোয়া কোটি রুপি।
এই টাকা জোগাড় করতে সুরেশ ১৫ লাখ রুপিতে তার গ্রামের জমি বিক্রি করেন। তার জমানো ছিল প্রায় ১০ লাখ রুপি। নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রাখেন একটি ব্যাংকে। এর বিনিময়ে ঋণ হিসেবে পান ৭০ লাখ রুপি। এছাড়া ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা মিলে উঠিয়ে দেন আরও প্রায় ২০ লাখ রুপি।
তবে এই কষ্টের সাগর পেরিয়ে সুখের দেখা পেয়েছেন ২০১২ সালে বিয়ে করা সুরেশ। হাসপাতালের বিল মিটিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ফিরেছেন ঘরে।
Advertisement
এমকেআর/জেআইএম/এমএইচআর