আইন-আদালত

নেত্রকোনার দুই রাজাকারের রায় যেকোনো দিন

একাত্তরে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার মো. ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে যেকোনো দিন (সিএভি) রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি সিএভি রাখা হয়েছে। রোববার ট্রাইব্যুনাল এর চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করার শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখে আদেশ দেন।পরে মামলার প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আনীত অভিযোগ প্রমাণে প্রসিকিউশন সক্ষম হয়েছে দাবি করে প্রসিকিউটর বাদল এ দুই আসামির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রত্যাশা করেন।প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। আসামিপক্ষে ছিলেন; অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবাহান তরফদার ও গাজি এম এইচ তামিম।গত বছরের ২ মার্চ এ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গত বছরের ৫ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য পেশ ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়। মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামিপক্ষ কোন সাক্ষি হাজির করতে পারেন নি।মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এ দুজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি সুনির্দিষ্ট ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুট। এ দুই আসামির বিরুদ্ধে ১৫ জনকে হত্যা, প্রায় ৫শ’ এর মতো বাড়িঘর লুট ও অগ্নিসংযোগে সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ করেছে প্রসিকিউশন।আসামি রাজাকার ওবায়দুল হকের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়ায় ও আতাউর রহমানের বাড়ি কেন্দুয়া এলাকায়। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ১২ অগাস্ট নেত্রকোনা পুলিশ এ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। তদন্ত সংস্থা সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দুই আসামি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করতে গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনা জেলা সদর ও বারহাট্রাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তারা ‘কুখ্যাত রাজাকার’ হিসেবে পরিচিতি পান। ওবায়দুল স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে ননীসহ অন্যান্য রাজাকার সদস্যদের নিয়ে নেত্রকোনা শহরের মোক্তার পাড়ার বলয় বিশ্বাসের বাড়ি দখল করে সেখানে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন।এফএইচ/এআরএস/এমএস

Advertisement