দেশে-বিদেশি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনের উৎপাদন বাড়াতে ন্যূনতম ১০ বছরের জন্য কর অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
Advertisement
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন সংগঠনটির সদস্য ও শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী।
প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে তিনি বলেন, মোবাইল ফোন উৎপাদেনে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগনির্ভর প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম ১০ বছরের কর অব্যাহতি দেওয়া হলে মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। মেড ইন বাংলাদেশ ট্যাগে আরও অনেক বিদেশি ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন উৎপাদন হবে ও কর্মসংস্থান বাড়বে। এছাড়াও ইলেকট্রিক মোটরযান আমদানিতে শুল্কমুক্ত বা শুল্ক সুবিধা কমানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও অংশ নেয় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ উইমেনস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (এটিএমএ) বা আত্মা।
Advertisement
এসময় আত্মার পক্ষ থেকে নিম্নস্তরের সিগারেটের কর ও মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়োনো, বিড়ির কর ও মূল্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়ানো, তামাকপণ্যের মধ্যে বিদ্যমান বিভাজন তুলে দেওয়া, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের কর আহরণ ব্যবস্থা জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।
সংগঠনটি মনে করে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ সুগম হবে।
আত্মার প্রস্তাবে আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করেও যুবসমাজকে নেশা থেকে বের করে আনা যাচ্ছে না। ধূমপানবিরোধী প্রচারসহ সমস্যাকে সামাজিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে এ থেকে বের হতে হবে।
তিনি বলেন, সিগারেটের দাম বাড়লে নিম্নবিত্ত পরিবারে খরচ বাড়বে। সিগারেটের পেছনে বেশি খরচের কারণে সেসব পরিবারের শিশুরা পর্যাপ্ত প্রোটিন থেকে বঞ্জিত হবে। সিগারেটকে নাগালের বাইরে রেখে অন্য নেশার দিকে তরুণসমাজ ধাবিত হোক সেটা আমি চাই না। জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করেই সিগারেটের বিষয়ে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।
Advertisement
এসময় বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিডব্লিউসিসিআই) কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে। এর মধ্যে রয়েছে- করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই সেক্টরে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা, নারীদের জন্য ব্যক্তিগত আয়কর সীমা সাড়ে তিন লাখের স্থলে সাড়ে চার লাখ টাকা নির্ধারণ করা, সব নারী উদ্যোক্তার ২০২২-২০২৩ এবং ২০২৩-২০২৪ এই দুই অর্থবছররের ভ্যাট, ট্যাক্স মওকুফ করা, নতুন নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা শুরুর প্রথম ৩ বছর ট্যাক্স ও ভ্যাট মওকুফ করা ও ব্যবসার নতুন ট্রেড লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি ৫০ শতাংশ হ্রাস করা ইত্যাদি।
আর ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি লুব্রিকেন্টের ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করা ও সমপরিমাণ মূল্যসংযোজন কর উৎসে কর্তন না করার প্রস্তাব দেয়।
সংগঠনটি জানায়, বর্তমানে শিল্পখাতে আমদানি পর্যায়ে লুব্রিকেটিং অয়েলের প্রধান কাঁচামাল অর্থাৎ বেইজ অয়েল ট্যারিফ রেটে আমদানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু বেইজ অয়েল থেকে উৎপাদিত পণ্য বিপণন ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্থানীয় ট্যারিফমূল্য নির্ধারিত নেই। ফলে ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যে অসামঞ্জতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বিক্রয়মূল্যের ওপর একটি আলাদা ট্যারিফমূল্য নির্ধারণ করে এই অসমতা দূর করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সবার সহায়তা হয় এমন ট্যাক্সেশন করা হবে। বিদেশ থেকে ব্যবহৃত বা পুরাতন লুব্রিকেন্ট যাতে বাংলাদেশে না আনা হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করেনি তিনি।
সভায় এনবিআরের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/ইএ/জেআইএম