দেশজুড়ে

সমস্যায় জর্জরিত ঠাকুরগাঁওয়ের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র

নানা সমস্যায় জর্জরিত বৃহত্তর দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার একমাত্র কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র। জনবল সংকট, অব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসম্মত ষাঁড়ের সেডরুম, কর্মকর্তাদের আবাসন ব্যবস্থাসহ প্রজনন কক্ষ থাকলেও তা ভাঙাচোরা, নেই আধুনিক ল্যাব, স্টোর রুম ও সিমেন পরিবহনের যানবাহন।অন্যদিকে প্রাণি সম্পদ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস করতে এসে পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়।  উন্নত জাতের গবাদি পশুর বিস্তারে বৃহত্তর দিনাজপুরের ২৩ উপজেলায় সিমেন সরবরাহের লক্ষ্যে প্রায় ২ একর জমির উপর ১৯৭৭ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপিত হয় কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র। এ কেন্দ্র থেকে উন্নত জাতের গরুর সিমেন (বীর্য) সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে কৃষক ও খামারীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ৩৮ বছর আগে নির্মিত এ কেন্দ্রটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। দূর থেকে দেখে মনে হয় এটি ভুতুড়ের কারখানা।বর্তমানে এ কেন্দ্রে ৪টি উন্নত জাতের ষাঁড় থাকলেও নেই স্বাস্থ্যসম্মত সেডরুম। অনায়াসে ওই সেডরুমে আসা যাওয়া করে বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি। এতে রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কেন্দ্রে আধুনিক ল্যাব ও স্টোর রুম না থাকায় গাদাগাদি করে রাখছে সিমেন সংরক্ষিত নাইট্রোজেনক্যান। নষ্ট হচ্ছে অনেক যন্ত্রপাতিসহ মূল্যবান সম্পদ। এ কেন্দ্রের ভেতরে আবাসিক কোয়াটারগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় এখানে থাকেন না কোনো কর্মকর্তা।সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহিম, সোলেমান আলীসহ কয়েকজন কৃষক ও ষাঁড় রক্ষক বলেন, এখান থেকে উন্নতজাতের গরুর সিমেন নেয়া হলেও তাতে তেমন কার্যক্রম নেই। গাভী প্রসবের পর দেখা গেছে বেশির ভাগই দেশি জাতের জন্ম নেয়। এতো বৃহত্তর একটি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র থেকে তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান কৃষক। আর কৃত্রিম প্রজননন কেন্দ্রের ষাঁড় রক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহত্তর দিনাজপুরের তিন জেলার একমাত্র কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র হওয়ায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা এ কেন্দ্রে প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর ২০/২৫ জন করে হাতে কলমে ব্যবহারিক ক্লাস করতে এসে পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। নেই বসার ব্যবস্থা ও আধুনিক ল্যাব। গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষা নিতে হচ্ছে তাদের। এতে মনোযোগচ্যুত হয়ে সব মিলিয়ে এখান থেকে ভাল ফল আসছে না। আর জরাজীর্ণ এ কেন্দ্রের সমস্যা স্বীকার করে কেন্দ্রটির সহকারী পরিচালক ডা. দেবাশীষ দাস বসেন, এরপরও চাহিদা অনুয়ায়ী উন্নত জাতের সিমেন সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রটির উপর দৃষ্টি দিলে এখান থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে সুফল পেতে পারে। অন্যদিকে উন্নতজাতের সিমেন সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি। রবিউল এহসান রিপন/এসএস/এমএস

Advertisement