ইলেকট্রিক গাড়িনির্মাতা টেসলার ৫০ লাখের বেশি শেয়ার দান করেছেন এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) ইলন মাস্ক, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫৭০ কোটি মার্কিন ডলার। অজ্ঞাত একটি দাতব্য সংস্থা বা ব্যক্তির কাছে এসব শেয়ার হস্তান্তর করেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে গত নভেম্বরে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সঙ্গে মাস্কের টুইটযুদ্ধের যোগসাজশ থাকতে পারে।
Advertisement
সিএনএনের খবর অনুসারে, গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সিউকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নথিপত্রে টেসলার ৫০ লাখ ৪৪ হাজার শেয়ার দান করার বিষয়টি সামনে আসে। এসব শেয়ার গত বছরের ১৯ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে দান করা হয়েছিল। তবে সেগুলো কে বা কারা পেয়েছেন, তার উল্লেখ নেই ওই নথিতে।
যে সময় শেয়ারগুলো দান করা হয়েছিল, তখন টেসলার শেয়ারের দর ছিল এক হাজার ডলারের ওপর। ওই সময় এর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দরের গড় হিসাবে ইলন মাস্ক প্রায় ৫৭০ কোটি ডলারের শেয়ার দান করেছেন দেখা যায়।
এই দানের ফলে ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতার স্বীকৃতি পাচ্ছেন টেসলা সিইও। যৌথভাবে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার দান করে এ তালিকায় তার ওপরে রয়েছেন শুধু বিল গেটস ও মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস।
Advertisement
এসব শেয়ার কাকে দান করা হয়েছে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি টেসলা কর্তৃপক্ষ। মাস্কের কাছ থেকেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত বছরের অক্টোবরে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) পরিচালক ডেভিড বিজলে দাবি করেছিলেন, ইলন মাস্ক ও অ্যামাজনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মতো ধনকুবেররা সম্পদের সামান্য অংশ দান করলেই বিশ্বের ক্ষুধা সমস্যা পুরোপুরি নিরসন সম্ভব।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএফপি প্রধান বলেছিলেন, বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকটে ভোগা ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষের জন্য ৬০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। ইলন মাস্ক ও জেফ বেজোসের একবারের দানই এসব মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
এ খবর নজরে পড়ার পর সেই দাবির সত্যতা প্রমাণের জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন টেসলা প্রধান। ইলন মাস্ক এক টুইটে বলেন, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি যদি স্বচ্ছ ও খোলামেলা হিসাবের মাধ্যমে কীভাবে ৬০০ কোটি ডলারে বিশ্বের ক্ষুধা সমস্যা মেটাবে তা ব্যাখ্যা করতে পারে, তাহলে আমি এখনই টেসলার শেয়ার বিক্রি করে দেবো। আপনারা ব্যাখ্যা দেন।
Advertisement
পরে সত্যি সত্যি ইলন মাস্ককে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেন ডব্লিউএফপির প্রধান। জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক এ সম্পর্কিত এক হাজার শব্দের একটি বিবরণীর লিংক টুইটারে শেয়ার করেন।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্কের চ্যালেঞ্জ জানানো ও ডেভিড বিজলের ব্যাখ্যা দেওয়ার ঘটনাগুলো ঘটেছিল নভেম্বরের ১ থেকে ১৯ তারিখের মধ্যে। আর টেসলার শেয়ার দান করার ঘটনাও ঘটেছে ঠিক তার পরপরই। অর্থের পরিমাণও প্রায় কাছাকাছি। এ কারণে অনেকে ধারণা করছেন, হয়তো ডব্লিউএফপি’কেই ৫৭০ কোটি ডলারের শেয়ার দান করেছেন ইলন মাস্ক।
এ বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।
সূত্র: সিএনএন
কেএএ/এএসএম