সিলেট শহরতলির খাদিমপাড়া বিসিক শিল্প এলাকায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হওয়া বনফুলের শ্রমিক রায়হান রাব্বী ওরফে রাজুর (২০) গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে চলেছে শোকের মাতম। ছোটভাই, বাবা-মায়ের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস।রাজুর মা রেনু বেগমের প্রলাপ যেন থামবার নয়। পাড়া-প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিতে এসে যোগ দিচ্ছেন কান্নার মিছিলে। মা রেনু বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘আমার আদরের সন্তানকে মারলো কে? রাজুরে ফিরাইয়া দে, আমি বিচার চাই খুনি গো।রাজু হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা পূর্বপাড়া চৌকিদার বাড়ির হারুনুর রশিদের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজু দ্বিতীয়। রাজুর দুই বোনও রয়েছে।মাস তিনেক আগে রাজুকে সিলেটের খাদিমপাড়া বিসিক শিল্পনগরী এলাকার খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বনফুল অ্যান্ড কোং লিমিটেডে কাজে দেন বড় ভাই মাসুদুর রহমান পারভেজ। শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা রাজুকে ছুরিকাঘাতে খুন করে। এ সময় শরীয়তপুরের দামড়া ধনই গ্রামের মৃত হাসু ডাক্তারের ছেলে তপু মিয়াকেও কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল নামের আরও একজন। রাসেল ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।রাজুর বাবা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘১০ থেকে ১২ দিন আগে ছেলের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। আমার রাজুকে বিনা অপরাধে যারা মেরেছে তাদের বিচার চাই।প্রসঙ্গত, ৬ জানুয়ারি সকালে সিলেটের শাহপরান থানাধীন পরগণা বাজারে আহত রাসেল আহমদসহ বিসিকের কয়েকজন কর্মচারী ফুটবল খেলতে যায়। ওই দিন খেলা নিয়ে এক যুবকের সঙ্গে মারামারি হয়। এরই জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলাকারীরা রাজুর ঘাড়ে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার দুই সহকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়।এ ঘটনায় নিহত রাজুর ভাই মাসুদুর রহমান পারভেজ বাদী হয়ে ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খাদিমপাড়া এলাকার রকি, পঙ্খি ও জামাল নামের ৩ জনকে আটক করে। শনিবার সন্ধ্যায় আটক এই তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস
Advertisement