লাইফস্টাইল

আইসক্রিমের ভেতরে কাঠি এলো যেভাবে

হরেক রঙের কাঠি আইসক্রিম ছোট-বড় সবাই খান। বিভিন্ন ফ্লেভার ও রঙের আইসক্রিম মেলে বাজারে। চকবার থেকে শুরু করে ললিসহ বিভিন্ন আইক্রিমের সঙ্গে কাঠি থাকে। যেটি ধরে আইসক্রিম খাওয়া হয়। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন কাঠি আইসক্রিমের জন্ম হয়েছিল কীভাবে।

Advertisement

জানলে অবাক হবেন, হঠাৎ করেই ১১ বছরের এক শিশুর ভুলে জন্ম হয়েছিলো কাঠি আইসক্রিমের। এক দুপুরে শরবত খওয়ার সময় শিশুটি একটি কাঠি দিয়ে নাড়িয়ে চুমুক দিচ্ছিল। এরপর সে ঘুরে ঢুকে যায়। তবে শরবতসহ গ্লাসটির কথা ভুলে বসে শিশুটি।

পরের দিন সকালে আবারো যখন সে ওই বারান্দায় খেলতে যায়, তখন তার নজর পড়ে ওই শরবতের গ্লাসের দিকে। শিশুটি দেখে, গ্লাসের শরবত জমে বরফ! তার মাঝে কাঠিটি দাঁড়িয়ে আছে। কাঠিতে আটকে আছে বরফ। এরপর সে কাঠি ধরে টেনে তোলে বরফ। মুখে পুরতেই সে টের পায় এর স্বাদ।

প্রায় ১১৭ বছর আগে ১১ বছরের এক শিশুর ভুলে হঠাৎ করেই আবিষ্কৃত হয় কাঠি আইসক্রিম। এটি তৈরি করেন আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায় বাসিন্দা ফ্রান্সিস উইলিয়াম এপারসন। পরিচিতরা তাকে ফ্র্যাঙ্ক নামে ডাকতেন।

Advertisement

এরপর শিশুটি বরফ গোলা তৈরির কথা বন্ধুবান্ধবদের কাছে জানায়। তারাও খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছিল। এর ১৮ বছর পর এপারসন কাঠি আইসক্রিম বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ওই বরফগোলার নাম রাখেন এপসিকল।

এটি ১৯২৩ সালের কথা। ক্যালিফোর্নিয়ার নেপচুন বিচ নামে একটি বিনোদনমূলক পার্কে প্রথম এই আইসক্রিম বিক্রি শুরু করেন তিনি। এরপর থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কাঠি আইসক্রিম।

এপসিকলের জনপ্রিয়তা দেখে ১৯২৪ সালে পেটেন্টের আবেদন করেন এপারসন। যদিও তত দিনে এপসিকলের নামবদল করে রাখা হয় পপ’স সিকল বা পপসিকল। সে নামেই কাঠি আইসক্রিমের পেটেন্ট করিয়েছিলেন এপারসন।

যতিও কাঠি আইসক্রিমে জনক হিসেবে এপারসনকেই বিবেচনা করা হয়, তবে এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ মেলেনি। জানা যায়, আর্থিক দুর্দশায় পড়ে ১৯২০ সালে জো লো কোম্পানিকে পপসিকলের সব সত্ত্ব বিক্রি করে দেন এপারসন। পরবর্তী সময়ে এ সংস্থাই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কাঠি আইসক্রিমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে নিয়ে যায়।

Advertisement

প্রথমদিকে ৭টি রঙের পপসিকল পাওয়া যেত। কিছুদিনের মধ্যেই পেপসিকলের প্রতিদ্বন্দ্বীও চলে আসে বাজারে। তারা কাঠি চকলেট আইসক্রিম নিয়ে আসে এই উপায়ে।

গুড হিউমার নামক একটি সংস্থা এমন আইসক্রিম বাজারে আনে। এটি দেখে এই সংস্থার বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনভঙ্গের মামলা দেয় জো লো কোম্পানি।

তবে আদালত থেকে রায় দেওয়া হয়, দুটো কোম্পানিই তাদের নিজ নিজ আইসক্রিম বিক্রি করতে পারেন। তবুও তাদের মধ্যকার আইসক্রিম যুদ্ধ থামেনি। ১৯৮৯ সালে আইসক্রিম যুদ্ধের অবসান হয়। পপসিকল ব্র্যান্ডের মালিকানা কিনে নেয় ইউনিলিভার। পরে তারা গুড হিউমারেরও দখল নেয়।

১৯৮৩ সালেই মৃত্যুবরণ করেন পপসিকলের জনক এপারসন। তার মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হয় ওকল্যান্ডের মাইন্টেন ভিউ কবরস্থানে। বর্তমানে প্রতি বছরে ২০০ কোটিরও বেশি পপসিকল বা কাঠি আইসক্রিম বিক্রি হয় বলে জানা গেছে।

সূত্র: হিসটেকো/এনপিআর

জেএমএস/জেআইএম