দেশজুড়ে

বরিশালে চাঞ্চল্যকর ৪ মামলার বিচার দেড় যুগেও শেষ হয়নি

বরিশালে জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে চিহ্নিত ৪টি মামলার বিচার কার্যক্রম প্রায় দেড় যুগেও শেষ হয়নি। এরমধ্যে দু’টি মামলার বিচার কার্যাক্রম উচ্চাদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। অপর ২টি মামলা বিচারাধীন থাকলেও সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় এর বিচার কার্যক্রম শেষ হচ্ছে না।বিচারাধীন মামলা দু’টি হচ্ছে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সাইদুর রহমান ফারুক ওরফে ভিপি ফারুক হত্যা মামলা এবং নগরীর কলেজ রোড এলাকার অ্যাডভোকেট দিলরুবা বেগম পাপিয়া হত্যা মামলা। উচ্চাদালতের নির্দেশে বিচার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে শিশু ইরা হত্যা মামলা ও অপর একটি এসিড নিক্ষেপ মামলা।চারদলীয় জোট শাসনামলে ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরীর ফকিরবাড়ি সড়ক থেকে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ভিপি ফারুককে অপহরণের পর আমানতগঞ্জ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুঘটে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিরা হচ্ছেন জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের বিভিন্ন স্তরের ১৯ নেতাকর্মী।আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা সকলে জামিনে আছেন। ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মামলাটি চাঞ্চল্যকর হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্ত ট্রাইব্যুনালের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিচার শেষ না হওয়ায় মামলাটি আবার জেলা জজ আদালতে প্রেরণ করা হলে বর্তমানে প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।একই আদালতে বিচারাধীন অপর মামলাটি হচ্ছে নগরীর কলেজ রোড সড়ক এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট দিলরুবা বেগম পাপিয়া হত্যা মামলা। ২০০৫ সালের ৩ নভেম্বর কলেজ রোড স্বামীগৃহে অ্যাডভোকেট পাপিয়া স্বামীগৃহে খুন হন। নিহতের বোন মাহফুজা হক কুমকুম বাদী হয়ে পাপিয়ার স্বামীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলে ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিরা সকলে জামিনে রয়েছেন।প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, ভিপি ফারুক হত্যা মামলার ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। ১১ জন এখনও বাকি। আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তাদেরকে সমন দেয়া হয়েছে।অন্যদিকে, আসামিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মুলাদীর তেরচর গ্রামে ২০০৫ সালের ২৬ জুন পালি নাহারের ওপর এসিড নিক্ষেপ এবং ২০০০ সালের ১৮ ডিসেম্বর নগরীর কাশীপুরের চহুৎপুর এলাকায় শিশু ইরা হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম উচ্চাদালতের নির্দেশে স্থগিত হয়ে আছে অনেক বছর ধরে।এ প্রসঙ্গে বরিশালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট গিয়াসউদ্দিন কাবুল বলেন, বেশিরভাগ আলোচিত হত্যা মামলার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মামলার যথেষ্ট প্রমাণাদি না থাকায় বাদীপক্ষ মামলা পরিচালনায় তেমন আগ্রহ দেখায় না। এমনকি বাদীপক্ষ উচ্চাদালতের রিট করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার নজির রয়েছে। আবার সাক্ষীরা বিভিন্ন কারনে সাক্ষী দিতে আদালতে চান না। এসব কারণে বছরের পর বছর ধরে আলোচিত মামলাগুলোর বিচার নিষ্পত্তি হচ্ছে না।সাইফ আমীন/বিএ

Advertisement