গাইবান্ধা সদর উপজেলার কচুয়ার খামার গ্রামে স্ত্রী তহমিনার শরীর আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে তারই স্বামী। শুক্রবার রাতে স্ত্রীর শরীরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় স্বামী আইনুল হক। পুড়ে যাওয়া দগ্ধ শরীর নিয়ে তহমিনা (১৭) এখন গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।তরুণী বধূটি অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। তারা এই নির্মম ঘটনার খবর পুলিশকে জানালে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মেহেদী হাসান সেখানে গিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।তহমিনার বাবা তছলিম উদ্দিন জানান, প্রেম করে প্রায় এক বছর আগে প্রতিবেশী আইনুলকে (২৪) বিয়ে করে তহমিনা। গত তিন দিন আগে তহমিনার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তার বিরুদ্ধে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির অভিযোগ এনে গালিগালাজ করে। অভিমানে তহমিনা বাবার বাড়িতে চলে আসে।শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামী আইনুলের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে তহমিনার মোবাইল ফোনে কথাকাটি হয়। কিছুক্ষণ পর আইনুল তার ঘরে ঢুকে তহমিনার মুখ চেপে ধরে বোতল থেকে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় পরিবারের লোকজন তহমিনাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।হাসপাতালে তহমিনার চোখ দিয়ে কেবলই পানি ঝরছিল। তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে তহমিনা জানায়, আমি এই নির্যাতনের প্রতিকার চাই।মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা সাধারণ সম্পাদক রিক্তু প্রসাদ বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী তহমিনার শরীরে আগুন লাগানোর ঘটনা একটি জঘন্য অপরাধ। তিনি অবিলম্বে স্বামীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়া মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে তহমিনার উন্নত চিকিৎসা ও আইনি সহযোগিতার জন্য সম্ভাব্য সব কিছু করার আশ্বাস দেন তিনি।ওসি বলেন, তহমিনার বাবা তসলিম উদ্দিন বাদি হয়ে আইনুলসহ তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে আইনুলকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে।হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক গোলাম রব্বানী বলেন, তহমিনার বাম স্তন, ডান স্তনের আংশিক, বুক, পেট ও যৌনাঙ্গসহ শরীরের ২৫ ভাগ অংশ পুড়ে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা দরকার।অমিত দাশ/বিএ
Advertisement