অর্থনীতি

মাত্রাতিরিক্ত শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত বিড়ি শ্রমিকরা

মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে বিড়ি মালিকরা কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পের ওপর চাপানো হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা।

Advertisement

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত ‘শিল্প বাঁচাও, শ্রমিক বাঁচাও’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানান বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিড়ি কারখানা বন্ধের ফলে শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে বেকার জীবনযাপন করছেন। কর্মসংস্থান না থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। অন্য কাজ না পেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন।

তিনি আরও বলেন, বিড়ির ওপর শুল্ক বাড়ানোয় অসাধু ব্যবসায়ীরা ফাঁকি দিয়ে জাল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন নকল বিড়ি তৈরি করে বাজারজাত করছেন। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

Advertisement

আব্দুর রহমান বলেন, বিড়ি দেশীয় শ্রমিকবান্ধব একটি শিল্প। অথচ বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্রে বৈষম্যমূলকভাবে এ শিল্প ধ্বংস করা হচ্ছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বিড়ি মালিক ও শ্রমিকদের কল্যাণে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করেছে সরকার। দেশীয় বিড়ি শিল্প সুরক্ষায় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হয় না।

আব্দুর রহমান বলেন, ভারতে দেশীয় শিল্পের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ন্যূনতম হারে করের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের প্রণোদনা। বিড়ি শ্রমিকদের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে রয়েছে বৃত্তির ব্যবস্থা। চিকিৎসার জন্য পৃথক হাসপাতালও রয়েছে। মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এছাড়াও বিড়ি মালিক ও শ্রমিকদের জন্য রয়েছে ঋণের ব্যবস্থা ও ১০ রুপির বিনিময়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা। কিন্তু বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান।

এসময় আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিড়িতে শুল্ক কমানোসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন। অন্যান্য দফাগুলো হলো- বিড়ির ওপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার করা, সরেজমিনে পরিদর্শন ছাড়া বিড়ি কারখানার লাইসেন্স না দেওয়া, কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নকল বাজার উচ্ছেদ করা এবং বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিক ও মালিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।

আলোচনায় ফেডারেশনের সভাপতি এম কে বাঙালী, সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক মো. শামীম ইসলামসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

এএএম/এমআইএইচ/এমআরএম/জিকেএস