বিনোদন

জায়েদ-নিপুণের আইনি লড়াইয়ে কে জিতবে, জানা যেতে পারে আজ

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (বিএফডিসি) নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে দুই সপ্তাহের বেশি সময় আগে। কিন্তু ভোটের ফলাফল নিয়ে ঝামেলা মিটছেই না। বিশেষত সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে। এ পদে প্রথমে চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও পরে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সামনে চলে আসেন নায়িকা নিপুণ আক্তার। বাতিল করা হয় জায়েদের সাধারণ সম্পাদক পদ।

Advertisement

নিজের পদ ফিরে পেতে এ নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জায়েদ খান। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ফলে জায়েদ সাধারণ সম্পাদক পদ ফিরে পান। উচ্চ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করেন নায়িকা নিপুণ আক্তার।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই আপিলের শুনানি নিয়ে জায়েদের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

আদেশে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার বিচারপতি। এ সময়ের মধ্যে জায়েদ-নিপুণ কেউ সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে পারবেন না মর্মেও জানানো হয়।

Advertisement

এদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটি আপাতত শূন্য।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নিপুণের করা আপিলের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। সেখানেই চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে পারে। ফলে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, এ নিয়ে সবার চোখ এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে।

ওইদিন নিপুণের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান জাগো নিউজকে বলেছিলেন, চেম্বার আদালতের আদেশের ফলে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) থাকলো। এর মানে সম্পাদক হিসেবে কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে নিপুণের আপিল আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। নির্ধারিত দিনে শুনানি শুরু হলে নিপুণের আইনজীবী আপিল (সিপি) ফাইল করবেন বলে জানান। পরে শুনানি একদিন পিছিয়ে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিন ঠিক করেন আদালত।

Advertisement

ওইদিন আদালতে নিপুণের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান। জায়েদ খানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও অ্যাডভোকেট মো.আহসানুল করিম। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি।

গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে জায়েদের বিরুদ্ধে ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনা’সহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ। ভোটের সাতদিন পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে আসছেন জায়েদ খান।

সবশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিএফডিসি প্রাঙ্গণে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ আক্তারের নেতৃত্বে নতুন কমিটি শপথ নেয়। পরে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে নিজ নিজ পদের চেয়ারে বসেন তারা। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন সমিতির সদস্যরা।

তবে নিপুণের এ বিজয় মানতে নারাজ জায়েদ খান। তিনি দাবি করেন, আপিল বোর্ডই অবৈধ। এরপর নিজের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী করে আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নিপুণের আইনজীবী আবেদন করেন। এরপর চেম্বার আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।

এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস