১৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ১৬ রান তুলে ফেলেছিল খুলনা টাইগার্স। মনে হচ্ছিল রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের দেখা মিলবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও খুলনা টাইগার্সের মধ্যকার ম্যাচটিতে। কিসের কী! উল্টো হেসেখেলে সহজ জয় পেয়েছে কুমিল্লা।
Advertisement
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া আঘাত হেনে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। সেই যে শুরু! আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি খুলনা। শেষ পর্যন্ত ১২৩ রানে গুটিয়ে গেছে মুশফিকের দল। আর ইমরুলের কুমিল্লা পেয়েছে ৬৫ রানের রেকর্ডগড়া জয়।
বিপিএল ইতিহাসে এতোদিন ধরে কুমিল্লার সবচেয়ে বেশি রানের ব্যবধানে জয়ের রেকর্ডটি ছিল ৬৩ রানের। চলতি মৌসুমেই ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে এ জয় পেয়েছিল তারা। আজ সেটিকে ছাড়িয়ে ৬৫ রানে জিতল ইমরুল কায়েসের দল।
খুলনাকে উড়িয়ে পাওয়া এই জয়ে ৯ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে কুমিল্লা। পাশাপাশি তাদের শীর্ষ দুইয়ে থেকে প্লে-অফ খেলাও নিশ্চিত হয়ে গেছে। অন্যদিকে ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে নেমে গেছে খুলনা। শেষ ম্যাচে তাদের সামনে জয়ের বিকল্প নেই।
Advertisement
আজ ১৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ার ম্যাচে খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেছেন থিসারা পেরেরা, খেলেছেন ২৩ বল। এছাড়া সৌম্য সরকার ২৫ বলে ২২, ইয়াসির আলি ১৯ বলে ১৮, আন্দ্রে ফ্লেচার ৭ বলে ১৬ ও শেখ মেহেদি হাসান করেছেন ১৪ বলে ১১ রান। মুশফিক আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
কুমিল্লার হয়ে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি। এছাড়া মোস্তাফিজ, নাহিদুল ইসলাম ও মইন আলির শিকার ২টি করে উইকেট। এর সঙ্গে ব্যাট হাতে ৩৫ বলে ৭৫ রানের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন মইন।
এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। প্রতিপক্ষে আমন্ত্রণে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারটি দেখেশুনেই খেলেন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়।
নাবিলের করা দ্বিতীয় ওভারে ১৬ ও খালেদের করা তৃতীয় ওভারে ১৯ রান নিয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করেন লিটন-জয়। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে জয়কে (১৫ বলে ১১) ফিরিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা দেন নাবিল। পরের ওভারে থিসারা পেরেরার প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ আউট হন লিটন।
Advertisement
মুশফিকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৪টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে মাত্র ১৭ বলে ৪১ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস খেলেন ডানহাতি ওপেনার লিটন। এরপর ৮ বল খেলে মাত্র ৫ রান করতে সক্ষম হন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। দশ ওভারের মধ্যে মাত্র ৭১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে কুমিল্লা।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যান ফাফ ডু প্লেসি ও মইন আলি। এ দুজনের জুটিতে আসে ৮৩ রান, তাও মাত্র ৭.৪ ওভার। যেখানে বড় অবদান মূলত মইন আলির। অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে খেলে ৩৬ বলে ৩৮ রান করেন ডু প্লেসি।
ঠিক বিপরীত রূপে ছিলেন মইন। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে মাত্র ২৩ বলে তুলে নেন নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৫তম ফিফটি। যেখানে ছিল ৭টি ছয়ের মার। ফিফটি ছোঁয়ার পর আরও ১ চারের সঙ্গে ২ ছক্কা হাঁকান মইন।
ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ১ চার ও ৯ ছয়ের মারে মাত্র ৩৫ বলে ৭৫ রানের সাইক্লোন চালান এ ইংলিশ অলরাউন্ডার। ইনিংসের একদম শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ১৮৮ রানে নিয়ে যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
খুলনার পক্ষে ২ উইকেট নিয়েছেন থিসারা পেরেরা। এছাড়া নাবিল সামাদ, শেখ মেহেদি হাসান, সৌম্য সরকার ও সৈয়দ খালেদ আহমেদের শিকার ১টি করে উইকেট।
এসএএস/এএসএম