বগুড়ার চারশ বছরের ঐহিত্যবাহী পোড়াদহ মেলা হয়ে গেলো । মূল মেলার পরদিন অনুষ্ঠিত হয় বউমেলা। পুরুষবিহীন এ মেলায় বিভিন্ন বয়সী নারীরা ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করেন। শুধু তাই নয়, এই মেলার অনেক বিক্রেতাও নারী। ফলে স্বাচ্ছন্দ্যে মেলা ঘুরে প্রসাধনীসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কেনেন নারীরা।
Advertisement
৩০ বছর ধরে শুধু নারীদের জন্য এমন মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বগুড়ার গাবতলী উপজেলায়।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ইছামতি নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় বসেছে বউ মেলা। সকাল থেকেই আশপাশের গ্রামের নারীরা হরেক রকম জিনিস কিনতে মেলায় আসতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, গাবতলী উপজেলা ছাড়াও পুরো বগুড়ার নারীরা মেলায় কেনাকটা করতে আসেন। তারা নিজেদের ব্যবহারের জন্য কসমেটিকস ও ইমিটেশনের গয়না কেনেন এই মেলায়।
মেলা উপলক্ষে আশপাশের গ্রামের নারীরা বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গ্রামগুলোর বাড়ি বাড়ি শুরু হয় উৎসব। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলাও মুখরিত হয়ে ওঠে। পুরো উপজেলাজুড়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় বউ মেলাকে ঘিরে।
Advertisement
নারীদের প্রসাধনী ছাড়াও মেলায় রয়েছে ছোটদের খেলনা আর গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় পণ্যের স্টল। এছাড়া রয়েছে মিষ্টির দোকান।
লাইলী আক্তার নামের এক গৃহবধূ মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, বিয়ে হওয়ার পর থেকে প্রতিবারই এ মেলায় এসেছি। এটা শুধু মেলা নয়, উৎসব। ইমিটেশনের গয়নাসহ ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী কিনতে মেলায় এসেছেন বলে জানালেন তিনি।
মেলায় বান্ধবীদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করছিল সুমাইয়া নামের এক কিশোরী। সে বলে, ‘বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে চুরি ও ইমিটেশনের গয়না কিনতে মেলায় এসেছি। আমরা সবাই মিলে অনেক মজা করছি।’
এর আগে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) একই জায়গায় ঐতিহাসিক পোড়াদহ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। পোড়াদহ মেলার পরদিনই আয়োজন করা হয় বউ মেলার।
Advertisement
বউ মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জানান, এবার মেলায় ২০০টি স্টল (দোকান) বসেছে। এগুলোতে নারীদের প্রসাধনী, ছোটদের খেলনা ও ঘর সাজানোর বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে।
বউ মেলার আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এবারের বউ মেলা ৩০তম। মেলায় কোনো পুরুষ আসতে পারেন না। এটা শুধু নারীদেরই মেলা। আগের দিন হয়ে যাওয়া পোড়াদহ মেলায় নারীরা আসতে পারেন না। এ কারণে তাদের কথা চিন্তা করেই বউ মেলার আয়োজন করা হয়। পুরুষবিহীন মেলাতে নারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে পছন্দমতো সামগ্রী কিনছেন। সন্ধ্যায় মেলা শেষ হবে।’
এসআর/এএসএম