মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের ১০ কোটি জনগণকে প্রথম ডোজের টিকাদানের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে দেশ। দেশে গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
Advertisement
শুরু থেকে এ পর্যন্ত (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫২৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৮টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ৬ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৩টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া করা হচ্ছে। সে হিসাবে ১০ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ১০ কোটি এবং মোট টিকা গ্রহণকারী (প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ মিলিয়ে) ১৭ কোটি ডোজ টিকাদানের মাইলফলক ছাড়াবে দেশ।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৬৩৫ জনকে টিকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৩ জনকে, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৯ জনকে এবং ৮৫ হাজার ৫১৩ জনকে দেওয়া হয়েছে বুস্টার ডোজ।
Advertisement
স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞলা বলছেন, করোনারভাইরাসের সংক্রমণ রোধ তথা করোনা প্রতিরোধে সরকার দেশের ৭০ শতাংশ জনসংখ্যা অর্থাৎ ১১ কোটি ৭০ লাখ জনগোষ্ঠীকে (প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ) টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে টিকাদান কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের ১০ কোটি জনগণকে প্রথম ডোজের টিকার আওতায় নিয়ে আসা নিঃসন্দেহে বড় ধরনের সফলতা।
বর্তমানে দেশে মোট ছয় ধরনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। টিকাগুলো হলো অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না, সিনোব্যাক এবং জনসন অ্যান্ড জনসন। এ পর্যন্ত মোট প্রদেয় ১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫২৭ টিকার মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪টি। এর মধ্যে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮৪৩টি প্রথম ডোজ, ১ কোটি ৮ লাখ ১৯ হাজার ৬৪টি দ্বিতীয় ডোজ এবং ১০ লাখ ২০ হাজার ১৮৭টি বুস্টার ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে।
ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩টি। এর মধ্যে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩টি প্রথম ডোজ, ৬০ লাখ ১ হাজার ৭২টি দ্বিতীয় ডোজের এবং ৩ লাখ ২৪ হাজার ৪১৮টি বুস্টার ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে।
সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৬টি। এর মধ্যে ৫ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ৯৫৩টি প্রথম ডোজের, ৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৯টি দ্বিতীয় ডোজের টিকা।
Advertisement
মডার্নার টিকা দেওয়া হয়েছে ৬৮ লাখ ৯১ হাজার ৫০০টি। এর মধ্যে ৩২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৮টি প্রথম ডোজ, ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৪ টি দ্বিতীয় ডোজ এবং ৯ লাখ ৯০ হাজার ৬১৮টি বুস্টার ডোজ।
সিনোব্যাকের টিকা দেওয়া হয়েছে ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ১০৪টি। এর মধ্যে ৭৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮০১টি প্রথম ডোজ এবং ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৩টি দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রথম ডোজের ২৯ হাজার ৭০০টি টিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সর্বমোট টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে তৃনমূল পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২ কোটি ৮৮ লাখ ১১ হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ কোটি ৭৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৪৫ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ১ কোটি ৪৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৬৯ জন এবং দ্বিতীয় ডোজের ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬ জন।
এছাড়া মাদরাসাশিক্ষার্থীদের ২ হাজার ৯৪৪ জনকে প্রথম ডোজের ও ভাসমান জনগোষ্ঠীর ১৮ হাজার ২৬৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
এমইউ/ইএ