আন্তর্জাতিক

বাইরে যা-ই পরুক, স্কুলে ইউনিফর্ম পরতে হবে: হেমা মালিনী

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা যাবে কি না সেই বিতর্কে উত্তাল ভারত। বিশেষ করে মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে কর্ণাটকে মুসকান খানের সাহসী প্রতিবাদের পর আলোচনার ঝড় উঠেছে। মামলা গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু এখনো দেশটিতে ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষ থেকে হিজাব নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো কথা শোনা যায়নি। বরং দলটির বিভিন্ন নেতা স্কুল-কলেজে হিজাব নিষিদ্ধ করতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দাবির পক্ষেই সুর মিলিয়েছেন। সবশেষ এ তালিকায় যোগ হয়েছেন ‘ড্রিম গার্ল’খ্যাত বলিউড অভিনেত্রী হেমা মালিনী।

Advertisement

বিজেপির এ সংসদ সদস্য বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বলেন, স্কুল শিক্ষার জায়গা। সেখানে ধর্মের বিষয় টেনে আনা উচিত নয়। প্রত্যেক স্কুলের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম রয়েছে, আর সেটি সম্মান করা উচিত। আপনি স্কুলের বাইরে যা খুশি পরতে পারেন।

একই কথা বলেছেন কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশও। তিনি বলেছেন, আদালত যেহেতু শিক্ষার্থীদের অন্তর্বর্তী ছাড়ের জন্য কোনো আদেশ দেননি, তাই (ড্রেস কোড সংক্রান্ত) সরকারি বিজ্ঞপ্তি কার্যকর থাকবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যোগ দিতে ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক।

মুসকানকাণ্ডের ঘটনাস্থল মাণ্ড্যর এমপি সুমালতা অম্বরীশ অভিযোগ করেছেন, সেখানে তরুণ, নিষ্পাপ ও সংবেদনশীল মনগুলোকে বিষাক্ত করে তুলতে অনেক রাজনীতির খেলা হচ্ছে। তার কথায়, আপনি সমুদ্র সৈকতে বা পুলে বিকিনি পরতে পারেন, কিন্তু স্কুলে তো আর পরেন না। সব জায়গারই একটি ড্রেস কোড রয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে মাণ্ড্যর প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে মুসকান খানের মুখোমুখি হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ঝড় তুলেছে। এর সঙ্গে ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজাব ইস্যুতে বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে।

Full video. pic.twitter.com/rUvjJZuThe

— Mohammed Zubair (@zoo_bear) February 8, 2022

ভিডিওতে দেখা যায়, হিজাব-বোরকা পরা মুসকান কলেজ ক্যাম্পাসে তার স্কুটার দাঁড় করিয়ে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিল। এসময় তাকে দেখে একদল তরুণ ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিতে দিতে তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে এতগুলো ছেলের বিপরীতে একা দাঁড়িয়েই সাহসের সঙ্গে হাত উঁচিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি তুলে পাল্টা চিৎকার করতে থাকে মুসকান। কিছুক্ষণের মধ্যে কলেজের কর্মকর্তারা এগিয়ে এসে তাকে ভেতরে নিয়ে যান।

মুসকান পরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, ওরা আমাকে কলেজের দিকে যেতে দিচ্ছিল না। কারণ আমি বোরকা পরে ছিলাম… ওরা জয় শ্রীরাম বলে চিৎকার করতে থাকে। তাই আমিও আল্লাহু আকবার বলি।

Advertisement

এ কলেজছাত্রী জানিয়েছে, তাকে হয়রানি করা লোকদের মধ্যে বেশিরভাগই বহিরাগত। তাদের মধ্যে বড়জোর ১০ শতাংশের মতো ওই কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি

কেএএ/এএসএম