শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার সিড্যা গ্রামে পাখি রক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লু। গাছে গাছে মাটির কলস বেঁধে দিয়েছেন তিনি। পাখি বাসা বাধছে সেখানে। ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের এক সপ্তাহে গ্রামটিতে পাখির আনাগোনা বেড়ে গেছে।
Advertisement
শরীয়তপুর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে সিড্যা গ্রাম। স্থানীয়রা জানান, গাছ-গাছালির ছায়ায় ঘেরা এ গ্রামে একসময় নানা প্রজাতির অনেক পাখি দেখা যেতো। কিন্তু দিন দিন গাছ কেটে ফেলায় পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অনেক পাখি এখন গ্রামে আসে না। বিষয়টি গ্রামের বাসিন্দা সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লুর নজরে আসে। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মাটির কলস কিনে গ্রামের গাছে গাছে ঝুলিয়ে দেবেন। এতে পাখিদের বাসা বাধা সহজ হবে। পাখির সংখ্যা বাড়বে।
যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ। শতাধিক মাটির কলস কিনে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, গ্রামপুলিশ ও গ্রামবাসী।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন সিড্যা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গাছের ডালে ডালে ঝুলছে মাটির কলস। সেটি ঘিরে পাখির যাওয়া-আসা। গ্রামের মানুষও খুশি পাখি দেখে।
Advertisement
সিড্যা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ মেহেদী হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে পাখিরা বাসা বাঁধছে। এখন গ্রামে আগের চেয়ে বেশি পাখি দেখা যায়।’
পাখিপ্রেমী পাখাল রাব্বি জানান, অনেক পাখিই গ্রামে আসা ছেড়ে দিয়েছিল। মাটির কলসে বাসা বেধে দেওয়ায় নিরাপত্তা পেয়ে পাখিগুলো আবার আসতে শুরু করেছে।
সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লু জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পাখিদের প্রজননের সময়। কিন্তু আমাদের এখানে গাছের সংকট রয়েছে। মাটির কলস দেওয়ার কারণে ঝড়, বৃষ্টি ও রোদ থেকে পাখিরা রক্ষা পাবে। বাসা বেধে পাখি বংশ বিস্তার করবে। আমার বিশ্বাস আমাদের ইউনিয়ন হবে প্রাকৃতিক পাখির একটি অভয়াশ্রম।’
তিনি বলেন, পাখির নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলতে গাছে গাছে মাটির কলস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একশ কলস ঝুলিয়ে দিয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে। তাই আরও কলস ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
Advertisement
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. পারভেজ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এ ধরনের উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহায়তা করবে।
মো. ছগির হোসেন/এসআর/এএসএম