মুখ মোটা কলসিগুলো সরু মুখ দিয়ে উঁকি দিচ্ছে রং বেরঙের পাখি, সড়কের পাশে, গাছে, সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘এসা পাখির বন্ধু হই, সুন্দর এ পৃথিবীকে বাঁচাই’ এই শ্লোগানে সেতু বন্ধনের উদ্যোগে কয়েকজন যুবক বিরল দৃষ্টান্ত রেখেছে।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবার এগিয়ে এসেছে সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিেনের কতিপয় সচেতন যুবক। তারা নিজের টাকা খরচ করে এলাকার কয়েক হাজার গাছে তৈরি করেছেন পাখিদের বাসা। যাতে পাখিদের অভয়াশ্রম গড়ে ওঠে। পরিবেশের ভারসাম্য ও কৃষিতে লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে তাদের ওই কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, খিয়ারজুম্মা হইতে খাতা মধুপুর ইউনিয়নের খালিশা বেলপুকুর ও উপজেলার ফাইলেরিয়া হাসপাতাল, প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল, খাদ্যগুদাম (সংরক্ষিত এলাকা), কয়ানিজপাড়া, মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, থানা চত্বর, খানকা শরীফ এবং পুরো উপজেলা চত্বরে প্রায় প্রতিটি গাছে বেঁধে দেয়া হয়েছে মাটির কলস। যাতে রয়েছে বাসা তৈরির অন্যান্য উপকরণ।খবর নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকার উদ্যোমী যুবক আলমগীর হোসেন ও বন্ধুদের নিয়ে পাখি নিধন রোধে এবং পাখিদের অভয়াশ্রম গড়ে তোলার জন্য কর্মকাণ্ড চালু করেন ২০১৪ সালে।আলমগীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, পাখিরা না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে না। তাছাড়া কৃষিতে পাখিদের ভূমিকা অপরিসীম। তারা ক্ষতিকর পোকা-মাকড় খেয়ে কৃষি চাষাবাদে ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও জানায়, তার বন্ধু রফিকুল ইসলাম, রাশেদুজ্জামান রিফাত, রাফি, সিরাজুল, টুইংকেলসহ আরো অনেকে তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন।সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন মাঠ স্কুলে পাখির নিধন ও পাখির বংশ বৃদ্ধি সচেতনা সৃষ্ট সম্পর্কে ও পাখিবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা সম্পর্কে বিভিন্ন মহলে আলোচনা করেন।তিনি আরও বলেন, এটি খুব ভালো ও ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তাদের এবং সকলের সহযেগিতায় পরিবেশ ও খাদ্য উৎপাদনে এই উদ্যোগ ভালো সুফল বয়ে আনবে। এদিকে, সেতু বন্ধনের উদ্যোগে পাখি রক্ষায় গৃহীত কর্মকাণ্ড দেখতে তার এলাকাগুলো আলোপথ সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিবর্গ এলাকা পরিদর্শন করে অভিভূত হয়েছেন।সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ওরা পাখি রক্ষার সংগ্রাম করছে। প্রকৃতির জন্য এটি ভালো উদ্যোগ। তাদের কাজের সহযোগিতা ও গাছে বেঁধে দেয়া কলস চুরির হাত থেকে বাঁচাতে এলাকার লোকজনকে সচেতন করা হচ্ছে।যুবকদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে সকলের। এলাকায় এসব যুবক পাখি প্রেমিক হিসেবে পরিচিত। পাখিরা মানুষের জন্য কতটা উপকারী তা এলাকার মানুষকে বোঝান, নিয়মিত বৈঠক করেন। তাদের মিলিত প্রচেষ্টয় রক্ষা পাচ্ছে পাখির জীবন। শিশুরা বেড়ে উঠছে শালিক, ঘুঘু, পেঁচা, শ্যামাসহ নানা রঙের পাখির সঙ্গে পরিচিত হয়ে আর কিচিমিচির ডাক শুনে।জাহেদুল ইসলাম/বিএ
Advertisement