দেশজুড়ে

প্রশিক্ষণের নামে সেই হাতিশাবকের ওপর নির্যাতন বন্ধের নির্দেশ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর কুচাইটল এলাকায় প্রশিক্ষণের নামে বাচ্চা হাতির ওপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় আদেশ জারি করেছেন আদালত।

Advertisement

আদেশে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এবং প্রাণিকল্যাণ আইন, ২০১৯ অনুযায়ী হাতির প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতন নিরসনে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) নিষ্ক্রিয়তা বেআইনি গণ্যে কেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে মর্মে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে, প্রশিক্ষণের নামে হাতির ওপর চালানো অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ২৬ জানুয়ারি পোষ মানানোর জন্য কথিত প্রশিক্ষণে একটি বাচ্চা হাতির ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় ওইদিন ‘পোষ না মানলে ৩ মাস এভাবেই বেঁধে রাখা হবে হাতি শাবকটি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে জাগোনিউজ২৪.কম।

এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও চিত্র মৌলভীবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আলী আহসান এ আদেশ জারি করেন।

Advertisement

পরিবেশ সংক্রান্ত ন্যায়বিচার (ইনভায়রনমেন্ট জাস্টিস) প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ এর ২৫ ধারার ক্ষমতাবলে মৌলভীবাজার জেলার জাস্টিস অব দ্য পিস হিসেবে এই আদেশ জারি করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চা হাতির এমন প্রশিক্ষণকে স্থানীয় ভাষায় ‘হাদানি’ বলে। এটি প্রচীন পদ্ধতিতে বন্যহাতিকে পোষ মানানোর বিশেষ এক কৌশল। প্রশিক্ষণের সময় হাতির বাচ্চার চার পা গাছের খুঁটির সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রা হয়। এসময় হাতির মাকে দূরে রাখা হয়। পোষ মানাতে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়। যথেষ্ট খাবারও দেওয়া হয় না এসময়। এভাবে দুইমাস প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর হাতিটিকে সার্কাসে বিভিন্ন কসরত দেখানো এবং গাছপালা পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হয়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী আদালতের নির্দেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে চিরাচরিত নিয়মে বাচ্চা হাতিকে পোষ মানানোর সনাতনী পদ্ধতির প্রশিক্ষণ চলে আসছে। জুড়ী উপজেলার এ ঘটনায় অন্তত হাতি পালনকারীরা জানতে পারবেন এটা অপরাধ। এ ধরনের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি অমানবিক ও আইনবিরোধী কাজ। আব্দুল আজিজ/এসআর/এএসএম

Advertisement