জানুয়ারি মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। টানা ২৩ দিনের যুদ্ধ রোববার সকালে শেষ হয়েছে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হলো কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের। মুখাগ্নি করেছেন ভাই হৃদয়নাথ।
Advertisement
সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে শিবাজি পার্কে আনা হয় লতার মরদেহ। শেষকৃত্যের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মরদেহে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় দেশটির রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকেও।
এর আগে একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সচিন টেন্ডুলকার, শাহরুখ খানসহ বিশিষ্টজনরা।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে এ সংগীতশিল্পীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, কিছুটা সাড়া দিচ্ছেন লতা। তার বিভিন্ন থেরাপি চলছে। কিন্তু সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি এ কোকিলকণ্ঠীর।
Advertisement
ছবি: সংগৃহীত
ক্যারিয়ারে এতো সফলতা থাকা সত্ত্বেও জীবনভর চিরকুমারী ছিলেন লতা মঙ্গেশকর। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি তাকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারি শিল্পীর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কারণে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু কোটি কোটি ভক্ত-শ্রোতা আর অনুরাগীর আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখে প্রত্যেকবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।
ভারতীয় সংগীতের কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে এক মারাঠি পরিবারে। বাবার হাত ধরে অভিনয় ও গানের জগতে এলেও মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। ১৯৪২ সালে একটি মারাঠি ছবির গান রেকর্ডের মধ্য দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাকে। মুম্বাই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে ‘মজবুর’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে প্রথম কণ্ঠ দেন তিনি।
Advertisement
১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করার নিরিখে ‘গিনেস বুক’-এ নাম উঠেছিল লতা মঙ্গেশকরের। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করার অনন্য নজির গড়েন প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করা এ শিল্পী। ২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। ১৯৮৯ সালে পান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার।
এমএইচআর/জিকেএস