চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পণ্য রপ্তানি করে দুই হাজার ৯৫৫ কোটি ডলার (২৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন) আয় করেছেন উদ্যোক্তারা। মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশই পোশাকখাত থেকে এসেছে। অর্থাৎ সাত মাসে এ খাত থেকে এসেছে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার।
Advertisement
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ওই প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, মহামারির শুরুতে বাণিজ্যে ধীরগতি দেখা দিলেও রপ্তানি আয়ে চমক দেখিয়েছেন দেশের উদ্যোক্তারা। গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেড়েছে রপ্তানি আয়। দেশের প্রধান রপ্তানিখাত তৈরি পোশাকশিল্পের ওপর ভর করেই বেড়েছে এই প্রবৃদ্ধি।
পোশাকশিল্পের দুটি উপখাত ওভেন ও নিট। কয়েক বছর আগে নিটের চেয়ে ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে বেশি বিদেশি মুদ্রা আয় হতো। তবে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে ওভেনকে পেছনে ফেলে ওপরে উঠে আসে নিটখাত।
Advertisement
অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এক হাজার ৩২৭ কোটি ডলারের নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৭১ কোটি ডলারের। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
একই সময়ে ৮৩ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। জুলাই-জানুয়ারি সময় পোশাক রপ্তানি থেকে যা আয় হয়েছে, তার ৫৫ দশমিক ৩৪ শতাংশই এসেছে নিট পোশাক থেকে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান জাগো নিউজকে বলেন, তিন কারণে পোশাক রপ্তানি আয় বেড়েছে। করোনাপরবর্তী নিউনরমাল সিচুয়েশনে মানুষের কেনাকাটার প্রবণতা বেড়েছে। সোর্চিং কান্ট্রি হিসেবে বায়ারদের কাছে আমাদের স্ট্যাবিলিটি বেড়েছে। চীন ও ভিয়েতনামের তুলনায় আমাদের ওপর তাদের আস্থা বেড়েছে।
তিনি বলেন, কাঁচামালের দাম বেড়েছে। সেটা দামের ওপর ইফেক্ট (প্রভাব) ফেলছে। কোয়ানটিটিও বেড়েছে। কিন্তু কোয়ানটিটির তুলনায় ভ্যালুটা অনেক বেশি বেড়েছে।
Advertisement
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা মিলিয়ে মোট ৫১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরেছে সরকার, যার মধ্যে পোশাক রপ্তানি থেকে লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ৩৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি খুব টেকসই নয় বলছেন উদ্যোক্তারা।
এ বিষয়ে ফজলে শামীম এহসান বলেন, এখন বায়াররা কিনছেন। কারণ তারা আগের দুই বছরে কিনেননি আমেরিকা, ইউরোপের বায়াররা কিছুদিন পর আর এ পরিমাণ কিনবে না। এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে আমাদের অনেক কিছু করণীয় আছে।
এসএম/এএএইচ/জেআইএম