ধর্ম

গালাগালি ও হত্যাকাণ্ড কোন ধরনের অপরাধ?

হাসি-ঠাট্টার ছলে, কাম-প্রবৃত্তি তাড়িত হয়ে কিংবা রাগের কারণে মানুষ অশ্লীল কথাবার্তা, গালিগালাজ ও হত্যার মতো মারাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন। মানুষকে গালিগালাজ করা বা কাউকে হত্যা করে ফেলা কোন ধরনের অপরাধ? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?

Advertisement

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তি কারো প্রতি ভৎসনা ও লানত করে না এবং সে কোনো অশালীন এবং অশ্লীল কথাও বলে না। (তিরমিজি)

অশ্লীল কথাবার্তা, গালিগালাজ মানুষের খারাপ চারিত্রিক গুণের অন্তর্ভূক্ত। যা কোনো অবস্থাতেই বৈধ নয়। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গালিগালাজ তথা খারাপ কথাবার্তা এবং হত্যাকান্ড কোন ধরনের অপরাধ; এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলিমকে গালিগালাজ করা ফাসেকি (জঘন্য পাপ) কাজ আর কোনো মুসলিমকে হত্যা করা কুফরি।’ (বুখারি)

Advertisement

কারো প্রতি কোনো কারণে রাগ আসলে হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণ করা উচিত। এ সম্পর্কেও রয়েছে হাদিসের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। রাগের সময় নবিজী কী বলতেন?

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গালিগালাজকারী, অশালীনভাষী এবং অভিসম্পাতকারী ছিলেন না। আমাদের কারো উপর তিনি নারাজ হলে কেবল এটুকু বলতেন যে- ‘তার কি হলো! তার কপাল ধূলিময় হোক।’ (বুখারি)

ইসলামি শরিয়াতে গালিগালাজ, অশালীন ও অশ্লীল কথাবার্তা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কারণ গালিগালাজের সময় সীমা লংঘন হয়, একে অপরকে খারাপ কথা বলে। পরস্পরের বাবা-মাকে গালিগালাজ করে। পরস্পর বংশের অন্য সবাইকেও গালাগাল দেয়। এর থেকে সৃষ্টি হয় রাগ এবং ক্ষোভ। সংঘটিত হয় হত্যাকান্ড। আর তা মানুষকে কুফরির দিকে নিয়ে যায়। এতে সমাজের পারস্পরিক সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট হয়। অহংকার সৃষ্টি হয়। নম্রতা-ভদ্রতার সীমা লংঘন হয়।

এসব অন্যায় অপরাধ থেকে পরস্পরকে মুক্ত রাখতেই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মর্মে উপদেশ দেন যে-

Advertisement

‘প্রকৃত মুসলমান তো সেই ব্যক্তি; যার মুখ (কথা) ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানে উচিত, পরস্পর গালিগালাজ ও অশ্লীল বাক্য বিনিময় থেকে বিরত থাকা। হাদিসের উপর আমল করা। ফাসেকি তথা জঘন্য পাপ এবং হত্যাকান্ড ঘটিয়ে কুফরির অপরাধ থেকে বেঁচে থাকা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের দিকনির্দেশনার উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। অশ্লীল কথাবার্তা ও হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধ থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমি।

এমএমএস/জেআইএম