জাতীয়

‘যদি মরে পড়ে থাকি এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে না, তাই লাইভে আসা’

ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। এর আগে তিনি বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। সে সময় জীবনের নানান হতাশা ও দুঃখের কথা তিনি তুলে ধরেন।

Advertisement

ধানমন্ডির নিজের বাসায় তিনি রাত ৯টার দিকে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন।

এ সময় তিনি বলেন, আমি মহসিন। ঢাকায় থাকি। আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো এক সময় আমি ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাই আমার ব্যবসা কিংবা কোনো কিছুই নেই। ভিডিও লাইভে আসার উদ্দেশ্য হলো, মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং আমার যে এক্সপেরিয়েন্স, সেটা শেয়ার করলে হয়তো সবাই জানতে পারবে, সবাই সাবধানতা অবলম্বন করবে।

তিনি বলেন, গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। তার এক ছেলে আমেরিকায় থাকে, মা মারা গেল অথচ ছেলেটি আসল না। এটা আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। কষ্ট লেগেছে।

Advertisement

আজকে আমার আরেক খালা মারা গেছেন। তারও একটি ছেলে আমেরিকায় ছিল। অবশ্য তার তিনটা ছেলে ইঞ্জিনিয়ার। তিনজনই বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন। তারা হয়তো দাফন–কাফনের কাজ সম্পন্ন করছে। সেদিক দিয়ে বলব, এই খালা অনেকটা লাকি।

আবু মহসিন বলেন, আমার একটা মাত্র ছেলে। সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে। আমার বাসায় আমি সম্পূর্ণ একা থাকি। আমার খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে খুব ভয় করছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়েও থাকি, আমার মনে হয় না যে এক সপ্তাহ কেউ জানতে পারবে, আমি মারা গেছি। তাই লাইভে আসা।

গত করোনা শুরুর আগে থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, যারা একা থাকেন, তারাই একমাত্র বলতে পারেন বা বোঝেন।

এরপর আর কিছু কথা বলেই মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তিনি গুলি করেন। চেয়ারেই পড়ে থাকে তার নিথর দেহ।

Advertisement

এ ঘটনার পর ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, নিজের অস্ত্রের গুলিতে একজন ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে আমরা আছি। সিআইডির ফরেনসিক টিমসহ আমাদের ইউনিট কাজ করছে। মরদেহের প্রাথমিক কাজ শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হবে।

অস্ত্রটি বৈধ ছিল কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, তার অস্ত্রটি বৈধ।

এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এমএইচআর