দেশজুড়ে

ময়নাতদন্তের জন্য ৫ মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

রাজধানীর পল্লবীতে জাহিদ হোসেন নাঈম (১৭) নামে এক শিক্ষার্থীকে প্রেম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তার পরিবার। গত ৩১ জুলাই হঠাৎ করে তার রুম থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় নাইমের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ঢাকার পল্লবী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়।পুলিশ বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। পুলিশের ভূমিকা দেখে নাইমের বাবা আব্দুল লতিফের সন্দেহ হলে রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।লাশের পুনঃময়নাতদন্তের জন্যে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটিন ম্যাজেস্ট্রেট নওগাঁ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নিদের্শ দেন। ফলে বৃহস্পতিবার দুপূরে নওগাঁ কেন্দ্রীয় গোরস্থান থেকে নিহত নাঈমের মৃত্যুর ৫ মাস ৭ দিন পর লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলনের পর নওগাঁ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।নিহতের বাবা আব্দুল লতিফ মন্ডল জানান, নিহত জাহিদ হাসান নাইম ঢাকায় ক্যাব্রিয়ান কলেজের এইচএসসির দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করত। ঢাকায় পড়ার জন্যে গত দুই বছর থেকে মিরপুর, সেকশন-৭, বাড়ি নং ৮৩০/৩ তৃতীয় তলায় নাইমসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র ছাত্রাবাসে থাকতো।লেখাপড়া সুবাদে সেখানে নিপুন হাওলাদার নামে এক মেয়ের সঙ্গে প্রমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে নিপুন আমার ছেলেকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু নাঈম ওই মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় নিপুন, তার বাবা নিকর চন্দ্র হাওলাদার ও মা লিপি শেড আমার ছেলেকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন।তিনি দাবি করেন, নিপুন ও তার সহযোগীরা নাঈমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে তার লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টিকে আত্মহত্যা হিসেবে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন।তিনি আরো জানান, প্রেমের সম্পর্কের কারণেই নাইমকে হত্যার করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ পরবর্তীতে এটিকে দ্রুত আত্মহত্যা বলে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। পুলিশের ভূমিকা দেখে সন্দেহ হলে রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। মেয়ের পরিবার এবং ছাত্রাবাসের ছাত্রদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সত্য ঘটনা জানা যাবে।ঢাকা সিএইডি পুলিশ পরিদর্শক আজাদ রহমান জানান, ঢাকার পল্লবী থানা থেকে আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশ চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। রিপোর্টের বিরুদ্ধে নিহত নাইমের বাবা আব্দুল লতিফের সন্দেহ বাদি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে সিএইডির কাছে মামলা হস্তান্তর এবং লাশের পুনরায় ময়নাতদন্তের আবেদন করেন।নওগাঁ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, লাশ উত্তোলনের পর নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। এ ব্যাপারে নওগাঁ সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবেন বলে জানান।আব্বাস আলী/বিএ

Advertisement