বিনোদন

পরীমনির জ্বর, প্রথম দিনই হয়নি সাক্ষ্যগ্রহণ

রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার প্রথম দিনই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।

Advertisement

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি।

জানা গেছে, পরীমনি অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী সময় চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে তিনি বলেন, জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পরীমনি। এজন্য আদালতে হাজির হতে পারেননি। আমরা সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য সময় আবেদন করছি।

Advertisement

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ১ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন।

এর আগে গত ৫ জনুয়ারি ঢাকার ১০ নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মামলায় পরীমনিসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে’ অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওই দিনই রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে র‌্যাব সদরদপ্তরে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব।

Advertisement

পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ এবং তাদের দুই সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও সবুজ আলীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে বনানী থানায় নেওয়া হয়। এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। পৃথক মামলা হয় রাজ ও তার সহযোগী সবুজ আলীর বিরুদ্ধেও।

র‌্যাবের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সেই মামলায় পরীমনিকে ওইদিনই আদালতে হাজির করা হলে প্রথমে চারদিনের রিমান্ড ও পরে আরও দুই দফায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। মাদক মামলায় মহানগর দায়রা জজ আদালতে করা পরীমনির জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ২৬ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে প্রতিবেদন দাখিল হওয়া পর্যন্ত পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার প্রায় এক মাস পর গত ১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পান এ চিত্রনায়িকা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি চলচ্চিত্র ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।

২০২১ সালে তারকা অঙ্গনের বেশ কিছু মডেল-অভিনেত্রীর নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ছিল আলোচনার তুঙ্গে। নামিদামি একাধিক মডেল-অভিনেত্রীর আনাগোনায় সরগরম ছিল আদালতপাড়া। কখনো চিত্রনায়িকা পরীমনি বা একা আবার কখনো পিয়াসা ও মৌদের মতো মডেলদের ঘিরে উত্তপ্ত ছিল আদালতপ্রাঙ্গণ।

গত বছর প্রথম পরীমনির নাম আলোচনায় আসে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ঘিরে। গত ৮ জুন রাতে বোট ক্লাবের ঘটনার ছয়দিন পর ১৪ জুন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। এ মামলায় নাসির ও অমিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর দুই মাস যেতে না যেতেই মাদক মামলায় খোদ পরীমনিকেই আটক করে র‌্যাব।

জেএ/ইএ/এমএস