সহজ শর্তে কৃষি ঋণ দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার-১৪২০ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য দেখিয়ে ভিক্ষা করে খেতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো। মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। কারো কাছে হাত পাতবো না। কারণ, আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে চাই না। কৃষিতে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ধান-মাছসহ কৃষিকে আমারা একটা সম্মানজনক অবস্থানে দাঁড় করাতে পেরেছি। শুধু যে ধান উৎপাদন বাড়িয়েছি তা নয়, সব কিছুর উৎপাদন বাড়িয়েছি। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা জানতেন কৃষি উন্নয়নের মাঝেই এ দেশের সার্বিক উন্নয়নের বীজ নিহিত রয়েছে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, কৃষিকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য বঙ্গবন্ধু সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কৃষিকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তিনি সুলভমূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ এবং সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। যোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে প্রথম সরকার গঠনের পর আমরা কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে আধুনিক এবং সুসংগঠিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করি। ফলে মাত্র ৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। এজন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আমাদের সেরেস পদকে ভূষিত করে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বিগত সাত বছরে ভর্তুকি বাবদ মোট ৫১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণের জন্য বিগত সাত বছরে প্রণোদনা ও কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি হিসেবে ৪৭৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়। আমরা কৃষকদের কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড চালু করি। ১০ টাকায় কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সরকারি প্রণোদনাসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদানে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করি।’ সরকারের পাশাপাশি কৃষিখাতে বিনিয়োগে বেসরকারি খাতকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আমাদের প্রচলিত ‘ভাসমান সবজি চাষ পদ্ধতি’কে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী চাষপদ্ধতির স্বীকৃতি দিয়েছে- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।একে/এমএস
Advertisement