সন্তানের বাবা হতে চান সব পুরুষই। তবে এটি কারও শখ হতে পারে তা কখনো ভেবেছিলেন? ব্রিটেনের অবসরপ্রাপ্ত অংক শিক্ষক ক্লাইভ জোন্সের এমনই এক অদ্ভুত শখ। এরইমধ্যে ১২৯ সন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি। আরও ৯ জন সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায়। তাহলে খুব শিগগিরই হবেন ১৩৮ সন্তানের জনক। তবে তার লক্ষ্য ১৫০ সন্তানের বাবা হওয়ার।
Advertisement
৬৬ বছরের ক্লাইভ জোনস এরইমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সন্তানের বাবার খেতাব পেয়েছেন। অন্তত তার নিজের দাবি তেমনই। তবে স্বাভাবিক উপায়ে নয়, শুক্রাণু দানের মাধ্যমে এসব সন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত অংক শিক্ষক ক্লাইভ জোন্স ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের শুক্রাণু দান করেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে ক্লাইভ জোন্স জানান, আমি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর শুক্রাণু দাতা। ১২৯ জন শিশু এরই মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছে। পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায় আছে আরও ৯টি শিশু।
১২ বছর ধরে শুক্রাণু দান করে আসা ক্লাইভ আরও বলেন, আমি আরও কয়েক বছর এই শুক্রাণু দান চালিয়ে যেতে চাই। আমার ইচ্ছা ১৫০ জন সন্তানের বাবা হওয়ার। সন্তানবিহীন পরিবারগুলোতে ‘খুশি’ ছড়িয়ে দিতে ক্লাইভ ফেসবুকের মাধ্যমে শুক্রাণু দান শুরু করেন।
Advertisement
তিনি বলেন, আমি অনেক ক্লিনিক এবং শুক্রাণু ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে জানি। কিন্তু তারা দান করে না, বীর্য বিক্রি করে। তিনি আরও বলেন, সন্তান পেয়ে ভীষণ খুশি মায়েদের যে বার্তাগুলো পাই সেগুলো দেখলে হয়তো মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারবে। আমি সেই খুশি অনুভব করতে পারি। একবার এক দাদি তার নাতনিকে পেয়ে আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল।
ক্লাইভ ৫৮ বছর বয়স থেকে শুক্রাণু দান শুরু করেন। এ কাজের জন্য ফেসবুক বেছে নেওয়ার কারণ হলো তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শুক্রাণু দান করতে পারবেন না। কারণ যুক্তরাজ্যের আনুষ্ঠানিক ভাবে শুক্রাণু দানের সময়সীমা ৪৫ বছর পর্যন্ত। এর বেশি বয়সী কেউ দেশটিতে শুক্রাণু ব্যাংকের মাধ্যমে শুক্রাণু দিতে পারবেন না।
কর্তৃপক্ষ অবশ্য জোনসের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করেছে। যুক্তরাজ্যের মানব নিষিক্তকরণ এবং ভ্রূণবিদ্যা কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, সব শুক্রাণু দাতা এবং রোগীদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমেই এই পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়া উচিত।
শুরুতে অবশ্য ক্লিনিকের মাধ্যমেই তিনি শুক্রাণু দান করতেন। তখন তার বয়সও অনেক কম ছিল। ক্লাইভের শুক্রাণুর ফার্টিলিটি (Fertility) বা উর্বরতার হার রীতিমতো বেশি ছিল। ফলে তার চাহিদাও বাড়তে থাকে। কিন্তু এরপরে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় বয়স। ইংল্যান্ডে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ৪৫ বছরের পরে আর কেই স্পার্ম দিতে পারবেন না। তাই বন্ধ হয়ে যায় ক্লাইভের শুক্রাণু দান।
Advertisement
কিন্তু তাতেও থেমে থাকেননি তিনি। এর পরে ক্লিনিকের মাধ্যমে স্পার্ম দেওয়া বন্ধ করে তিনি নিজের উদ্যোগে ব্যক্তিগতভাবে শুরু করে দেন শুক্রাণু বিতরণ। নিজের ভ্যানেই তিনি এই ঘটনাটি ঘটাতে থাকেন। আর তাতেই তাঁর দাবি, সন্তানের সংখ্যা ১২৯ ছাড়িয়ে গিয়েছে এসব করে। আরও ৯ সন্তানের বায়োলজিক্যাল বাবা হতে চলেছেন তিনি। জুটেছে World's Most Prolific Sperm Donor-এর তকমাও।
এখনো পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু তার এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, এভাবে ব্যক্তিগতভাবে তার থেকে শুক্রাণু নেওয়াটা মোটেই স্বাস্থ্যকর কাজ নয়। বরং ক্লিনিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সেখান থেকেই নেওয়া উচিত।
যদিও এতে থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না ক্লাইভ এবং তার শুক্রাণুপ্রার্থীদের। রমরমিয়ে চলছে বিতরণের কাজ। থামার কোনো লক্ষণ নেই তাদের মধ্যে। ক্লাইভের লক্ষ্য ১৫০ সন্তানের জনক হওয়া।
সূত্র: ডেইলি মেইল
কেএসকে/জিকেএস