হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার পর তাঁকে সেজদা করার নির্দেশ প্রদান করা হয় ফেরেশতাদেরকে। তাদের মধ্যে একজন জিনও ছিল। যে আল্লাহর এ আদেশকে মানতে পারেনি। যে কাজটি তাকে আদেশ পালনে বিরত রেখেছে, তাহলো আত্ম-অহংকার। যা সৃষ্টির মধ্যে প্রথম পাপ। কুরআনুল কারিমের সুরা বাক্বারার ৩৪নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلاَئِكَةِ اسْجُدُواْ لآدَمَ فَسَجَدُواْ إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ অর্থাৎ এবং যখন আমি আদমকে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতিত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।অত্র আয়াতে অহংকার বলতে وَاسْتَكْبَرَ শব্দটিকে বুঝিয়েছেন। ইবলিস আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার ভিত্তি কোনো ভুল ধারণা কিংবা দ্বিধা-সংশয় নয়; বরং আত্ম-অহংকারই ছিল এর ভিত্তি। শ্রেষ্ঠত্ববোধ থেকেই ইবলিসের এ অস্বীকৃতি এসেছিল।হজরত কাতাদাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, এই অহংকারের পাপই ছিল সর্বপ্রথম পাপ। যা ইবলিস হতে প্রকাশ পেয়েছিল।অহংকার প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একলোক বলল, যে কোনো লোক পছন্দ করে তার জামাটা ভালো হোক, তার জুতাটা ভালো হোক? তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর; তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। অহংকার হচ্ছে, সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা।’ (মুসলিম)পরিশেষে...যেহেতু এ আত্ম-অহংকারের কারণে ইবলিস তার গলদেশে অভিশাপের গলাবন্ধ পরিধান করেছে। মহান আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ে বিতাড়িত হয়েছে। এবং অহংকারের কারণে কোনো মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। সে অহংকার যদি মুসলিম উম্মাহর মাঝে দেখা দেয়, তবে শয়তানের অনুসরণ এবং ধ্বংস ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। সুতরাং দুনিয়ার প্রতিটি কাজে আল্লাহর রহমতের আশা করার পাশাপাশি অহংকার থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ তাওফিক কামন করি। আল্লাহ সবাইকে অহংকারমুক্ত জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস
Advertisement