মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও স্বাধীন বাংলার পতাকার রূপকার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী আরেফসহ ৫ জাসদ নেতার হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হচ্ছে আজ রাতে। যশোর কারাগারে ৩ জনের ফাঁসির রায় কার্যকর হবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- আনোয়ার হোসেন, রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু ও হাবিবুর রহমান হাবি। এ রায় কার্যকরের সংবাদে নিহতের পরিবার ও জেলার বিভিন্ন মহলে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কারশেদ আলী বলেন, এ রায় কার্যকরে আমরা খুশি। রায় কার্যকর হলেও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কমে আসবে।জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় চরমপন্থিদের ব্রাশফায়ারে প্রাণ হারান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও সমশের মন্ডল। হত্যাকাণ্ডের ৫ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ হত্যা মামলায় ১০ জনের ফাঁসি ও ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করলে ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট ৯ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। সরকার পক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট। ৯ জনের মধ্যে এলাচ নামের এক আসামির মৃত্যু হয় কারাগারে। হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ৩ জন আসামি রিভিউ আবেদন করেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৩ আসামির রিভিউ আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। আাজ রাতে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হচ্ছে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নানা মহল। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক অ্যাড. আব্দুল জলিল বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর মামলার রায় কার্যকর হচ্ছে। আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। যারা পালিয়ে রয়েছে তাদেরও গ্রেফতার করে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হোক। জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, এ রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ার মানুষ দায়মুক্ত হবে। সরকার প্রমাণ করেছে খুনী যত শক্তিশালী হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।আল-মামুন সাগর/এসএস/পিআর
Advertisement