ফিচার

দিবসটা স্বামী-স্ত্রীর

বিয়ে একটি সামাজিক রীতি। যেটি একজন নারী এবং একজনের পুরুষের চারহাত এক হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছর ঘুরে ফিরে আসে সেই দিনটি। যেটি প্রত্যেক দম্পতি পালন করেন নিজেদের বিবাহবার্ষিকী হিসেবে। বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে বিয়ে নিয়ে কারও আর তেমন উচ্ছ্বাস দেখা যায় না।

Advertisement

হয়তো বড়জোর ভালোবাসা দিবসে দুজন দুজনকে ফুল কিংবা উপহার দিয়ে উদযাপন করেন দিনটিকে। তবে জানেন কি দম্পতিদের জন্য বছরের একটি দিন নির্ধারিত রয়েছে। এই দিনটিতে তারা সব কর্মব্যস্ততাকে দূরে রেখে নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পারবেন। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে দিনটি থাকে ছুটির দিন।

অনেক দম্পতি রয়েছেন যারা নানান কাজে দিন পার করেন। চাকরি, বাচ্চা, ঘর সামলে নিজেদের মধ্যে দুদণ্ড কথা বলারও ফুসরত পান না। এভাবে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে তৈরি হয় একঘেয়েমি এবং দূরত্ব। যা অনেক সময় বিবাহ বিচ্ছেদে রূপ নেয়।

২০০০ সালে এই দিবসটি পালন শুরু হয়। ১৯৮৪ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান সামরিক সঙ্গী দিবসের উদ্ভাবন করেছিলেন। যারা সামরিক বাহিনীতে চাকরি করেন। পরিবার থেকে দিনের পর দিন দূরে থাকেন। তাদের জন্যই মূলত দিবসটির উদ্ভাবন করা হয়। তবে পরবর্তীতে তা সব পেশার মানুষের জন্যই করা হয়।

Advertisement

স্পাউস ডে ছাড়াও রয়েছে স্ত্রী এবং স্বামীদের জন্য আলাদা আলাদা দিবস। প্রতিবছর ২৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিনটি স্বামী-স্ত্রী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অনেক দম্পতিই দিনটিকে তাদের বিবাহবার্ষিকীর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। কেননা, এই দিনে দু'জনই কাছাকাছি থাকতে পারছেন।

তবে ২৬ জানুয়ারি দিনটি একেক দশকে পালিত হয়েছে একেক দিবস হিসেবে। যেমন ১৮৫০ এর দশকে এই দিনে বলা হত “ইট মাস্ট হ্যাভ বিন লাভ”। কেননা, তখন দম্পতিরা আশ্রয়, সুরক্ষা এবং খাবারের জন্যই মূলত বিয়ে করতো।

১৯৮০ এর দশকে বলা হত “ভিশন অব লাভ” বা প্রেমের দর্শন। মূলত, এই সময়েই জাতীয় স্বামী-স্ত্রী দিবসের সূত্রপাত। তবে দিনটি প্রমিক-প্রেমিকা, বাগদত্ত-বাগদত্তা এবং নববিবাহিতরাও পালন করতে পারবেন।

১৯৯৪ সালের বলা হত “উই ফাউন্ড লাভ'” বা আমরা ভালোবাসার খোঁজ পেয়েছি। ওই বছরেই জাপানে “ভাল স্বামী-স্ত্রী দিবস” পালন শুরু হয়। ২০২০ সালে এসে বলা হয় “মাই হার্ট উইল গো অন” অর্থাৎ আমার হৃদয় তোমার জন্য রইবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও দম্পতিরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়।

Advertisement

“জাতীয় স্বামী-স্ত্রী দিবসের” সূচনা করা হয় সঙ্গীকে ধন্যবাদ জানানোর মধ্য দিয়ে। দিনটি বিবাহিত দম্পতিদের একসঙ্গে সময় কাটাতে এবং পরষ্পরের গুণগান করতে উৎসাহিত করে। ভ্যালেন্টাইনের বিপরীতমুখী এ দিবসটি উপহার নয় বরং সময় দেওয়াকে প্রাধান্য দেয় বেশি।

একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ মিনিট সঙ্গীর হাত ধরে রাখলে বা তাকে জড়িয়ে ধরলে এমন কয়েকটি হরমোন নিসৃত হয় যা আনন্দ দেয়, সুখি বোধ করায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত করে।

শুধুমাত্র দম্পতিদের জন্যই নয়, দিবসটি গণমাধ্যমেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে মজাদার সব তথ্য আর জরিপের জন্য। এমনই এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০ লাখ দম্পতির মধ্যে ১৭ শতাংশই এমন যাদের পূর্বে একবার বিয়ে হয়েছে। তাদের কাছে এই দিনটি শুধুমাত্র একটি দিন নয় বরং সঙ্গীকে অনুভূতি প্রকাশের একটি বিশেষ দিন।

আজ আপনার সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটান। কর্মব্যস্ততাকে ছুটি দিন বিশেষ এই দিনে। ঘুরে আসুন পছন্দের কোনো জায়গা থেকে। খেতে পারেন পছন্দের খাবার। দুজন দুজনকে কিছু উপহার দিতে পারেন।

সূত্র: ডেইস অব দ্য ইয়ার/ ন্যাশনাল টুডে

কেএসকে/এমএস