দেশজুড়ে

স্বজনদের সঙ্গে ইশারায় কথা বললেন মামুনুল

নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলেছেন সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলার আসামি হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। এদিন তার পরিবারের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জ কোর্টে আসলেও তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো কথা বলার সুযোগ পাননি।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে তৃতীয় দফায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

আর এ সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আসেন মামুনুলের ছোট ভাই মাশরুর হোসেন ও ছোট বোন সায়মা ও ভাগিনা জাবেদসহ পরিবারের অনেকেই। তারা সবাই মামুনুল হকের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্য এসেছিলেন। তবে তারা সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাননি।

ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মামুনুল হক দূর থেকে ইশারায় কথা বলেন। সেই সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও দূর থেকেই ইশারা-ইঙ্গিতে তার কথার উত্তর দেন। সাক্ষ্য নেওয়ার সময়ও পরিবারের সদস্যরা আদালতের বারান্দাতেই অবস্থান করছিলেন। তবে তারা কাছে যাওয়ার সুযোগ পাননি।

Advertisement

এদিকে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মামুনুল হক তার আইনজীবীদের সঙ্গে অনেকবারই কথা বলেছেন। শেষে আবার আইনজীবীর সঙ্গে এজলাসে কথা বলতে চাইলে পুলিশ বাধা দেন। পরে বিচারকের অনুমতি নিয়ে এজলাসের ভিতরে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন।

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদাতারা হলেন- সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, রিসোর্টের কর্মচারী ইসমাঈল ও মাহবুবুর রহমান।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা সবাই মামুনুল হক ধর্ষণকাজে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। ১৫ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয় তাকে। পরে ২টায় আবার তাকে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

Advertisement

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। সকাল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় মামুনুলের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন অফিসার নাজমুল ইসলাম অনিক ও আনসার গার্ড রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

তার আগে গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একই সঙ্গে ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।

এর আগে ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/আরএইচ/এমএস