আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের তিন ভাগিনাকে হারাতে মারিয়া হয়ে উঠেছেন তার ছোটভাই নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
Advertisement
এরা হলেন, সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু, জায়দল হক কচি ও সিরাজিস সালেকিন রিমন।
এদের মধ্যে মঞ্জু ২নং চরপার্বতী, কচি ৫নং চরফকিরা ও রিমন ৬নং রামপুরে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। তাদের সবার প্রতীক আনারস। মঞ্জু ও রিমন মন্ত্রীর আপন ভাগিনা, আর কচি মন্ত্রীর ফুফাতো বোনের ছেলে। তারা সবাই ভোটের ময়দানে এবারই প্রথম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন ভাগিনার বিপরীতে ওই ইউনিয়নগুলোতে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যানদের পক্ষ নিয়েছেন মেয়র কাদের মির্জা।
Advertisement
তার ঘোষিত প্রার্থীরা হচ্ছেন, ২নং চরপার্বতী ইউনিয়নে মোজাম্মেল হোসেন কামরুল (টেলিফোন), ৫নং চরফকিরায় জামাল উদ্দিন লিটন (মোটরসাইকেল) ও ৬নং রামপুরে ইকবাল বাহার চৌধুরী (মোটরসাইকেল)।
কাদের মির্জা প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় ও উঠান বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ভাগিনাদের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছেন। তিনি দাবি করেন, ভাগিনারা ওবায়দুল কাদেরের ‘নাম বিক্রি করে’ প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন।
এদিকে কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিবাদমান দুই পক্ষের সমঝোতা না হওয়ায় এখানে ইউপি নির্বাচনে কোনো পক্ষকেই নৌকা দেওয়া হয়নি। উম্মুক্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগেরে ভোটের লড়াই জমে উঠেছে।
অন্যদিকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের তিন ভাগিনাকে সমর্থন দিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ।
Advertisement
মিজানুর রহমান বাদল বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এ তিনজনের ধারে কাছেও থাকবে না কাদের মির্জার প্রার্থীরা। এজন্য আমরা প্রশাসনের শক্ত ভূমিকা প্রত্যাশা করি।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান বলেন, আমাদের প্রার্থীদের রয়েছে ক্লিন ইমেজ। এরসঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের সততা ও উন্নয়নে ফলে ভাগিনাদের প্রতি জনগণের জোয়ার উঠেছে।
তবে কাদের মির্জা বলেন, আমার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানামুখি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভোট ডাকাতিরও পায়তারা হচ্ছে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোট না হলে প্রশাসন দায়ী থাকবে। এরজন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানও দায়িত্ব এড়াতে পারবেন না। প্রয়োজনে ভোট বর্জন করে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জে আট ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখানে ৩২ জন চেয়ারম্যান পদে, সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ৮৬ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে ৩২৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত এক বছর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মতবিরোধ চলে আসছে। এর এক পক্ষে সেতুমন্ত্রীর ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং অপর পক্ষে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইতোমধ্যে এক সাংবাদিকসহ দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/জেআইএম