করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অর্ধেক জনবল নিয়ে অফিস করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার। এক্ষেত্রে গর্ভবতী নারী এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা বাসা থেকে অফিস করবেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
Advertisement
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
করোনা সংক্রমণ রোধে সোমবার থেকে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অর্ধেক সংখ্যক কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়ে পরিচালনার নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অর্ধেক জনবলের বিষয়টি সোমবার থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। অর্ধেক সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ যেনো চলে। করোনার যে সংক্রমণ তা ঊর্ধ্বগতি, কালকে প্রায় ৩১ শতাংশ সংক্রমণ ছিল।’
Advertisement
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু তৃতীয় ঢেউয়ে আছি, আমাদের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে এ রকম নির্দেশনা ছিল, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করেছি। যার কারণে অর্ধেক সংখ্যক নিয়ে যে অফিস করা এবং এরও কম সংখ্যক নিয়ে অফিস করার প্র্যাকটিস করেছি।’
তিনি বলেন, ‘যারা সাধারণত গর্ভবতী নারী, যারা একটু অসুস্থ- এরা ঘরে থেকে অফিস করবেন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। বিশেষ করে জুম, ই-নথি, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা তাদের কাজগুলো চালিয়ে নেবেন।’
‘ইতোমধ্যে আমরা সবাইকে জানিয়েছি, মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য অফিস, রাস্তাতে যানবাহনের সংখ্যা দেখে বুঝতে পেরেছেন যে মানুষ কিন্তু ইতোমধ্যে সচেতন হয়েছে এবং আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা রয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তারাও কিন্তু উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার কারণে এটি বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে দেখছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তবে যেহেতু গতকালকে প্রজ্ঞাপন হয়েছে আমরা আরও বেশি বাস্তবায়ন দেখব আগামীতে। এ সময়ে সবাইকেই সহযোগিতা করতে হবে।’
Advertisement
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অর্ধেক জনবল নিয়ে পরিচালনার বিষয়টি মানা হচ্ছে কিনা তা কীভাবে তদারকি করা হবে- এ বিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইতোমধ্যে বলা হয়েছে যারা স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট থেকে শুরু করে আগের মতোই...। কারণ অনেকেই যারা মানতে চান না তাদের মানানোর জন্য কিছুটা আমাদের আইনের প্রয়োগ করতে হয়। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য। বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং করে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই চাইবো যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এর আগেও সাড়া দিয়েছেন, প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্যই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুরক্ষার চেষ্টা করেন। এটা একটা দায়িত্ববোধের ব্যাপার। তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অসুস্থ হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
সরকারি কর্মচারীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে টিকা দেওয়া হয়েছে কিনা তা কীভাবে মনিটর করা হবে- জানতে চাইলে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যারা ফ্রন্টলাইনে কাজ করেন, জরুরি সেবার কাজে যুক্ত থাকেন তাদের আমরা জরুরিভাবেই টিকা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। আমরা টিকা দেওয়ার বিষয়টি উদ্বুদ্ধ করেছি এবং ব্যাপকভাবে টিকা নিচ্ছে। আমরা দ্বিতীয় ডোজ শেষ করেছি এবং বুস্টার ডোজ ব্যাপকভাবে সাড়া পড়েছে। টিকা দেওয়া আছে বলেই যারা সংক্রমিত হচ্ছেন তাদের আগের মতো অত সমস্যা হচ্ছে না এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অনেক কম। এটা টিকার সুফল। সেক্ষেত্রে আমাদের টিকা কার্যক্রম পুরোপুরি সক্রিয় আছে এবং যাতে সবাই নেয় এবং যাদের নেওয়ার বেশি প্রয়োজন বিশেষ করে গ্রামপর্যায়ে বয়স্করা নেয়, আমরা মাইকিং করে উদ্বুদ্ধ করছি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি ভিত্তিতে এবং গার্মেন্টসকর্মী, পরিবহন শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা টিকার ওপর জোর দিচ্ছি। সরকার টিকা আনার ব্যবস্থা করছে এবং পর্যাপ্ত টিকা আমাদের রয়েছে।’
আরএমএম/জেএইচ/জেআইএম