জাতীয়

গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ: সাবেক ইউএনওর পদাবনতি

গুচ্ছগ্রাম-দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে গাইবান্ধা সদরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের পদাবনতি করা হয়েছে। একই সঙ্গে আত্মসাৎ করা ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮০ টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে। সম্প্রতি এই শাস্তি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

Advertisement

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগে পদায়নের জন্য ন্যস্ত সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) থাকাকালে গুচ্ছগ্রাম-দ্বিতীয় পর্যায় (সিভিআরপি) প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধা সদরে বরাদ্দ করা ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প কমিটি গঠন না করা, একক দায়িত্বে কাজ করা, মাটির কাজ না হওয়া সত্ত্বেও ঘরের বরাদ্দ করা টাকা উত্তোলন করা, অ্যাকাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন না করে নগদ টাকা উত্তোলন করা, বদলিজনিত কারণে দায়িত্ব হস্তান্তরের পরেও বিধি-বহির্ভূতভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া, ৫৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে গোপনীয় সহকারীর নিকট জমা রাখা, কারিগরি ও সাধারণ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে।

“তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী ‘অদক্ষতা’, ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতিপরায়ণতা’র অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিভাগীয় মামলা করে কৈফিয়ত তলব করা হয় এবং একই সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত শুনানি চান কি না তা জানতে চাওয়া হয়।”

অভিযুক্ত কর্মকর্তা অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি লিখিত বক্তব্য দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন। ওই বছরের ৮ মার্চ তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ শেষে ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

Advertisement

২০২০ সালের ৫ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮’ অনুযায়ী গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

তিনি ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিলে তা সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে ‘নিম্নপদে অবনমিতকরণ’ ও আত্মসাৎ করা ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮০ টাকা তার বেতন-ভাতা থেকে আদায় করে গুরুদণ্ড আরোপের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের মতামত চেয়ে গত বছরের ১১ মার্চ চিঠি দেওয়া হয়।

পিএসসি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে গত বছরের ১৮ আগস্ট চিঠি দেয়। পরে তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপতির দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শফিকুর রহমানকে ২ বছরের জন্য নিম্নপদে অবনমিতকরণ অর্থাৎ তার বর্তমান বেতন স্কেল ৩৫৫০০-৬৭০১০/-টাকা এর নিম্ন-স্কেল ২৯০০০-৬৩৪১০/-টাকা স্কেলে ৩৮৮৯০/- টাকা মূল বেতনে সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব পদে অবনমিতকরণ গুরুদণ্ড আরোপ এবং আত্মসাৎ করা ৪৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮০ টাকা তার বেতন-ভাতা থেকে আদায় করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

Advertisement

আরএমএম/এআরএ/জিকেএস