সরকারি আলিয়া মাদরাসার সাবেক ছাত্রদের ৫ দাবি

রাজধানীর বকশিবাজারের ‘সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকা’র নিজস্ব জমিতে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন স্থাপন করার সিদ্ধান্ত বাতিল, নতুন হল নির্মাণসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র ফোরাম।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানান মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের সদস্য সচিব মাওলানা মোহাম্মদ সুরুজুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার নামে চার একর জমি দখলমুক্ত করা; ছাত্রদের আবাসন সংকট নিরসনে কমপক্ষে আরও দুটি হল নির্মাণ করা; বর্তমান ছাত্রদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ছাত্রাবাস অবিলম্বে খুলে দেওয়া এবং ২৫০ বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকাকে ‘ঢাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ করা।

লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ সুরুজুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান সরকার মাদরাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে। অথচ সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার ছাত্রাবাসসহ ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিবর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের ভেতরে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর স্থাপন করার পরিকল্পনা সরকারের বিমুখ আচরণ ও মানবদ্য শিক্ষাকে অবহেলা করার শামিল। আমলাতান্ত্রিক কূটকৌশলে সরকারকে ভুল বার্তা দিয়ে মাদরাসার শিক্ষক, ছাত্র তথা সাধারণ ধর্মপ্রাণ জনতার মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব সৃষ্টির অপকৌশল কি না তা ক্ষতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

তিনি বলেন, ‘মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের জন্য ভবন আলাদা ও স্বতন্ত্র কোনো জায়গায় হতে পারে। সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার মতো স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসের প্রাচীরের মধ্যে ওই প্রস্তাবিত ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা শুধু অমানবিকই নয়, অনৈতিক। ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উচ্চশিক্ষার এই বিদ্যাপীঠকে অবজ্ঞা, অবহেলা ও তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার এক গভীর নীল নকশার অংশ।’

মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন স্থাপনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়া ঢাকার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা এই ধরনের হটকারি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি অবিলম্বে এ ধরনের অযৌক্তিক ও অমানবিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষায় প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্ররা এ দেশের ধর্মপ্রাণ জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে।’

তিনি বলেন, ‘মাদরাসা-ই-আলিয়া ঢাকার জমি দখল করে অন্য প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করলে দেশের আপামর জনতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হবে এবং সরকার ও জনতাকে মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেবে, যা সরকারের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদরাসা-ই আলিয়া ঢাকার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের আহ্বায়ক মাওলানা আজিজুল হক মুরাদ, সদস্য মাওলানা ইসমাইল ফারুক, মাওলানা আমিনুল হক, শহিদুল ইসলাম কবির, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, মো. হাবিবুল্লাহ প্রমুখ।

আরএসএম/এআরএ/জেআইএম