চলতি মৌসুমে মুন্সিগঞ্জে পূরণ হয়নি আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ২১০৪ হেক্টর কম জমিতে আবাদ হয়েছে আলু। এদিকে আবাদ মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে বিলম্বে।
Advertisement
এতে হেক্টর প্রতি জমিতেও ফলন কম হওয়া ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে আশঙ্কায় দেশের আলু উৎপাদনের শীর্ষ জেলার কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭৯০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, তবে আবাদ হয়েছে ৩৫৭৯৬ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৯৬৮০ হেক্টর, টঙ্গীবাড়ী ৯৫০০ হেক্টর ও শ্রীনগরে ২০০০ হেক্টর।
অন্যদিকে সিরাজদিখান ৯১৫১ হেক্টর, লৌহজং ৩৩৬০ হেক্টর ও গজারিয়ায় ২১০৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত এসব জমিতে মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১১ লাখ ৫৮৯৩ মেট্রিক টন নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী হেক্টর প্রতি ৩০ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি আলু উৎপাদন হওয়ার কথা। আর লক্ষ্যমাত্রা মধ্যে অনাবাদি রয়েছে ২১০৪ হেক্টর জমি। সে হিসেবে এসব জমিতে ৬৩০০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হওয়ার কথা থাকলেও জমি অনাবাদি থাকায় সেটি আর হচ্ছে না।
Advertisement
এদিকে কৃষকরা জানান, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আলু রোপণের উত্তম সময়। তবে এবছর আবাদ চলাকালে ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির পর অধিকাংশ জমিতেই আলু আবাদ হয়েছে দেরিতে। অনেক জমিতে বীজ নষ্ট হওয়া দ্বিতীয় দফায় আবাদ করেনি অনেকে। এতে আবাদও হয়েছে কম জমিতে।
ফলে আশানুরূপ ফলন হবে না বলেই ধরে রাখা যা। এখন অনূকুল আবহাওয়া ও বাম্পার ফলন না হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের উপায় নেই। এতে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষরা। অন্যদিকে বৃষ্টিতে অনেক জমিতে আবাদ করতে হয়েছে দুই দফা। এতে সেসব জমিতে খরচের পরিমাণও বেড়েছে দ্বিগুণ।
এবিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এ বি এম ওয়াহিদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও বৃষ্টির কারণে এবছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এক্ষেত্রে উৎপাদন নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গে প্রচুর আলু উৎপাদন হয়েছে। সেক্ষত্রে সামগ্রিক দেশে আলুর ঘাটতি পরবে না।
তবে মুন্সিগঞ্জের কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আলুর পাশাপাশি সাথী ফসল ও অনাবাদি জমিতে বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা কিংবা অন্য ফসল আবাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বৃষ্টিতে যেসব কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছে তাদের নামের তালিকা তৈরি করে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
আরাফাত রায়হান সাকিব/এমএমএফ/এমএস