রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহ শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য প্রতিদিন রোগীর ভীড় বাড়ছে। জ্বর, ঠান্ডা ও কাশির উপসর্গ নিয়ে রোগীরা সকাল থেকে সিরিয়াল দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। নমুনা পরীক্ষা করতে আসা রোগীদের মধ্যে মধ্যবয়সী ও প্রবীণদের সংখ্যা বেশি। রাজধানীর একাধিক হাসপাতাল ঘুরে ও প্রাপ্ত পরিসংখ্যান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশে করোনার প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১ জানুয়ারি দেশের সরকারি বেসরকারি ৮৫২টি ল্যাবরেটরিতে ১৫ হাজার ৭৪টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৫ হাজার ২১৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সেদিন শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
ওইদিন (১ জানুয়ারি) পর্যন্ত দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় এক কোটি ১৫ লাখ ৬ হাজার ৭০২টি। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। দেশে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৭৬ জন।
মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২১ জানুয়ারি (শুক্রবার) দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১১ হাজার ৪৩৪ জন। এদিন ৮৫৭টি ল্যাবরেটরিতে ৪০ হাজার ৪২৩টি নমুনা সংগ্রহ ও ৪০ হাজার ১৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে এক কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭১৫টিতে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ১৯২ জন।
Advertisement
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে সরকার আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে। এসময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারেও কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে রাজধানীর মুগদা ৫০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করতে রোগীর ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে। প্রতিদিন এখানে দেড়শ থেকে ২০০ রোগীর করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সরেজমিন দেখা গেছে, নারী, পুরুষ ও শিশুরা লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শারমিন আক্তার জানান, বর্তমানে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সব বয়সী রোগীরা এলেও মধ্যবয়সী ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি বলে তিনি জানান।
বিভাগ ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখো গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ১৩৪টি নমুনার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ হাজার ৬৮৬টি (শনাক্ত ৭ হাজার ৯৬১ জন), চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ হাজার ৫৭৮টি (শনাক্ত ১ হাজার ৫৯৬ জন), ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৯৩টি (শনাক্ত ২২২ জন), রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ৬৩৬টি (শনাক্ত ৪৭৫জন), রংপুর বিভাগে ৫৬৭টি (শনাক্ত ১৬৪ জন), খুলনা বিভাগে ১ হাজার ৬৭৬টি (শনাক্ত ৪১৯ জন), বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ১৬২টি (শনাক্ত ২৯৯ জন) এবং সিলেট বিভাগে ১ হাজার ৫৭০টি (শনাক্ত ৪৪৫ জন) নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
Advertisement
এমইউ/কেএসআর/এএসএম