বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) আরও স্বাধীন ও শক্তিশালী সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার একটি প্রস্তাবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের সবচেয়ে বড় দাতা যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থাটির প্রতি বাইডেন প্রশাসনের দীর্ঘমেয়াদী সমর্থনের অঙ্গীকার। শনিবার (২২ জানুয়ারি) এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
Advertisement
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রস্তাবটিতে টেকসই অর্থায়নের কথা বলা হয়েছিল। এতে সংস্থাটির প্রত্যেক সদস্যের বাধ্যতামূলক বার্ষিক চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। গত ৪ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নথি অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।
বড় সংকট মোকাবিলায় ডব্লিউএইচও’র সীমাবদ্ধতা কতখানি তা করোনাভাইরাস মহামারিতে স্পষ্ট বোঝা গেছে। পরিকল্পনা ছিল, ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় সংস্থাটির ক্ষমতা বাড়িয়ে বিস্তৃত সংস্কার আনা।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ প্রস্তাবে বিরোধিতা করছে। ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে মার্কিন প্রশাসনের, বিশেষ করে চীন সংক্রান্ত। ডব্লিউএইচও’র ক্ষমতা না বাড়িয়ে বরং আলাদা একটি তহবিল গড়তে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যা জরুরি স্বাস্থ্য সংকট প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অর্থায়ন করবে।
Advertisement
এ আলোচনায় উপস্থিত থাকা ইউরোপের চার কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের বাধাদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলার অনুমতি না থাকায় তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন প্রশাসন এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
জানা যায়, ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রস্তাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যদের বাধ্যতামূলক চাঁদার পরিমাণ ২০২৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়, যেন তা থেকে ২০২৮ সাল নাগাদ সংস্থাটির ২০০ কোটি ডলারের মূল বাজেটের অন্তত অর্ধেকটা জোগাড় করা যায়। বর্তমানে এর হার ২০ শতাংশেরও কম।
মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই ও বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে ডব্লিউএইচও’র মূল বাজেটের অর্থ খরচ করা হয়। সংস্থাটি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো নানা ধরনের রোগ ও নির্দিষ্ট বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বছরে আরও ১০০ কোটি ডলার বা তারও বেশি সংগ্রহ করে থাকে। প্রস্তাবের সমর্থকরা বলছেন, সদস্য দেশ ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মতো দাতব্য সংস্থাগুলোর ঐচ্ছিক অনুদানের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়ায় দাতাদের নির্ধারণ করা বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে বাধ্য হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যার ফলে কোনো কিছু ভুল হলেও সদস্যদের খুব একটা সমালোচনা করার ক্ষমতা থাকে না সংস্থাটির।
ডব্লিউএইচও সংস্কারে পরামর্শ দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মহামারি সংক্রান্ত একটি স্বাধীন প্যানেলকে। তারা সদস্যদের বাধ্যতামূলক চাঁদা আরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। সংস্থাটির বর্তমান ব্যবস্থাকে ‘শুদ্ধতা ও স্বাধীনতার জন্য বড় ঝুঁকি’ উল্লেখ করে সদস্যদের চাঁদার পরিমাণ মূল বাজেটের অন্তত ৭৫ শতাংশ করার পরামর্শ দিয়েছে প্যানেল।
Advertisement
কেএএ/এএসএম