সমুদ্র সম্পদের টেকসই আহরণের লক্ষে বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করেছে সরকার। আর এই বিষয়টিতে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্কারজয়ী হলিউড তারকা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও।
Advertisement
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় টুইটারে এক পোস্টে তিনি বাংলাদেশ সরকারসহ স্থানীয় সম্প্রদায় ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (এনজিও) অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ওই পোস্টে লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও লেখেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশে নতুন প্রতিষ্ঠিত সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং এনজিওগুলোকে অভিনন্দন, যা জীববৈচিত্র্যের একটি অসাধারণ পরিমণ্ডলকে রক্ষা করবে এবং বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল প্রাচীরের জন্য প্রাকৃতিক আবাসস্থল জোগান দেবে।
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে মিথেন গ্যাস (গ্যাস হাইড্রেন্ট) ও বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক শৈবালের অস্তিত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। এর প্রেক্ষাপটে গত ৭ জানুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেখানে বলা হয়, সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ৭০ মিটার গভীরে ওই এলাকার সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে।
Advertisement
বৈশ্বিকভাবে হুমকির মুখে থাকা প্রবাল, গোলাপী ডলফিন, হাঙ্গর, রে মাছ, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক পাখি, সামুদ্রিক ঘাস, সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য এবং এদের আবাসস্থল সংরক্ষণ; সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মানোন্নয়ন; ব্লু ইকোনমি সমৃদ্ধকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-১৪) অর্জনের লক্ষ্যে এই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
Congrats to the Government of Bangladesh, local communities & NGOs on a newly established Marine Protected Area around Saint Martin’s Island that will protect an incredible community of biodiversity and provide key habitat for Bangladesh’s only coral reef. ( : courtesy of WCS) pic.twitter.com/T286nurs7b
— Leonardo DiCaprio (LeoDiCaprio) January 21, 2022এর মধ্যে উত্তরে বঙ্গোপসাগর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক জলসীমা এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এলাকা রয়েছে।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে সাগরের বুকে ৮ দশমিক ৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার।
Advertisement
এ দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া এখানে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, পাঁচ প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল এককালে।
এসব প্রজাতির অনেকগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব জীববৈচিত্র্য।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনের ৫৯০ হেক্টর এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করেছিল সরকার।
এমআরআর